টালা সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণের পরে চাপ বেড়েছে বেলগাছিয়া সেতুর উপরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
টালা সেতুতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরে এক ধাক্কায় যানবাহনের চাপ অনেকটাই বেড়েছে বেলগাছিয়া সেতুতে। অতিরিক্ত যান চলাচলের ফলে ওই সেতুও যাতে বিপন্ন না হয়, সেই জন্য তার অতিরিক্ত ভার ছেঁটে ফেলতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার।
মূল কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে বেলগাছিয়া সেতুর রাস্তা থেকে পুরু পিচের আস্তরণ তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ওই কাজের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বানও করেছে রাজ্য পূর্ত দফতর। কাজ শেষ করতে এক মাস সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে।
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, টালা সেতু জীর্ণ হওয়ায় বেলগাছিয়া সেতুর উপরে যানবাহনের চাপ আগের তুলনায় আচমকা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত ভার বহনের কারণে সেতুর ক্ষমতা যাতে হ্রাস না পায়, তা নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগেভাগেই ওই কাজ করা হচ্ছে। তবে সেতু-পথে পুরু হয়ে লেগে থাকা পিচের আস্তরণ তুলতে গিয়ে কম্পনের কারণে যাতে নতুন করে তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয় তা-ও লক্ষ রাখা হবে বলে দফতর সূত্রের খবর। দরপত্রে সে জন্য রোবট নিয়ন্ত্রিত বিশেয যন্ত্র ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। সেতুর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তার উপর দিয়ে ট্রাম রাস্তা তৈরির কাজও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ রাজ্যের ৩২টি রেলওয়ে ওভারব্রিজের (আরওবি) হাল নিয়ে সমীক্ষার জন্য রাইট্সের সঙ্গে কথা হয়েছিল পূর্ত দফতরের। তার মধ্যে টালা এবং বেলগাছিয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য রেলের আওতাধীন সংস্থা রাইট্সকে বলেছিল রাজ্য পূর্ত দফতর। টালা সেতু নিয়ে আগেই রাজ্যকে রিপোর্ট দিয়েছে তারা। বেলগাছিয়া সেতুর পরীক্ষানিরীক্ষার কাজও শুরু করেছে ওই সংস্থা।
বছর খানেক আগে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে সেতুর উপরে যথেচ্ছ ভার বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বছরের পর বছর ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ না করে ত্রুটি ঢাকতে শুধু পাথর এবং পিচের আস্তরণ পুরু করা হয়েছে বলেও পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল।
বেলগাছিয়া সেতুর উপরের কয়েকশো টন পিচ, পাথর এবং ট্রাম রাস্তার কংক্রিট হটাতে পারলে তার ভার বহন ক্ষমতার খানিকটা পুনরুদ্ধার হতে পারে বলে মত পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞদের। সেই কারণেই অতিরিক্ত গাড়ির ভার সামলাতে তড়িঘড়ি ওই পদক্ষেপ।