শুভ্রাংশু রায় ও অর্জুন সিং ফাইল ছবি।
তাঁর রাজনৈতিক পাপের জন্যই মা অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন। সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই বলেছেন শুভ্রাংশু রায়। সেই বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করতে পরোক্ষে বিজেপি-র রাজনৈতিক অবস্থানের নিন্দাই করেন মুকুল রায়ের ছেলে। এ বার সে বিষয়েই সরব হলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। তাঁর দাবি, অবৈজ্ঞানিক কথা বলছেন শুভ্রাংশু। অর্জুনের এই বক্তব্যেই নতুন করে সামনে এসে গেল বিজেপি-র অন্দরের চেনা দ্বন্দ্ব। অর্জুন ও মুকুল শিবিরের দূরত্ব রাজ্য রাজনীতিতে অজানা নয়। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনে বীজপুর আসনে শুভ্রাংশুর হারের পিছনে অর্জুনের ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করেন মুকুল ঘনিষ্ঠরা।
কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক তথা বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুলের স্ত্রীর অসুস্থতা রাজনীতির অঙ্গনে চলে এসেছে গত কয়েক দিন আগেই। এখন শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক হলেও শুভ্রাংশুর মা কৃষ্ণা রায় হাসপাতালে রয়েছেন বেশ কিছু দিন ধরেই। তিনি করোনাকে হারাতে পারলেও অন্যান্য সমস্যায় ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। এই অবস্থায় গত বুধবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখতে যাওয়া, কিছু ক্ষণ পরেই রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাসপাতাল সফর, পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে মুকুলকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোন মিলিয়ে শুভ্রাংশুর মায়ের শারীরিক অবস্থার সঙ্গে রাজনীতি মিশে যায়। আগে খোঁজ না নিয়ে বিজেপি অভিষেককে অনুসরণ করছে বলে অভিযোগও ওঠে।
এমনই আবহে শুভ্রাংশু সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘এমনটাও হতে পারে, আমি যে পাপ করেছিলাম তার পরিণতিতেই মাকে এত ভুগতে হচ্ছে। আমরা ভোটের প্রচারে ভেদাভেদের রাজনীতি করেছিলাম। আর সেই সময়ে যাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি তাঁদের অনেকেই এখন মায়ের সুস্থতা কামনা করে চাদর চড়াচ্ছেন।’’ কিছুটা অনুশোচনার সুরেই শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘বাবার নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা রোজা রাখলে মা তাঁদের জন্য সেহরি বানিয়ে রাখতেন।’’ এই প্রসঙ্গেই শুভ্রাংশুকে আক্রমণ করেন অর্জুন। ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘যে পাপ ও প্রায়শ্চিত্বের কথা বলা হচ্ছে তার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অর্থহীন কথাবার্তা। এর কোনও মানেই হয় না।’’
আগেই অভিষেকের প্রশংসা করেছেন শুভ্রাংশু। এ বারও তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক সৌজন্যের যে নজির রেখেছে তা জাতীয় রাজনীতিতেও কম দেখা যায়।’’ তবে কি তিনি তৃণমূলে যাচ্ছেন? গত কয়েক দিন ধরে এই প্রশ্নের উত্তর কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন শুভ্রাংশু। ‘হ্যাঁ’ যেমন বলেননি তেমন ‘না’ বলতেও শোনা যায়নি। এ বার শুভ্রাংশু বললেন, ‘‘রাজনীতিতে সব রাস্তাই খোলা থাকে। তবে এখন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল মাকে সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে আসা।’’