প্রতীকী ছবি।
পূর্ব কলকাতার জলাভূমি ‘দখল’ করলে শাস্তি পাবেন নাগরিকেরা। শীঘ্র এ ব্যাপারে হোর্ডিং-ও লাগাবে কলকাতা পুরসভা। মঙ্গলবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এই কথা জানিয়েও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ‘উন্নয়নের’ পক্ষেই মত দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু কিছু সময় জলাভূমিকে জনস্বার্থে ব্যবহার করতে হতে পারে।’’
কেমন ব্যবহার? মেয়র তথা পরিবেশমন্ত্রীর দাবি, পূর্ব কলকাতা জলাভূমির একাংশের উপরে সেতু নির্মাণ হলে বায়ুদূষণ অনেকটা কমানো সম্ভব। তাঁর ব্যাখ্যা, ওই উড়ালপুল দিয়ে সহজেই প্রচুর গাড়ি বিমানবন্দরের দিকে চলে যাবে। ফলে যানজট কমবে, গাড়ির ধোঁয়াও কম বেরোবে। এই উড়ালপুল তৈরির কথা গত বছর পরিবেশ দিবসেও বলেছিলেন তিনি। এ বারে ফের সেই প্রসঙ্গ তোলায় এটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।
পরিবেশগত গুরুত্বের কথা বিচার করে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘রামসার’-এর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি। নিয়ম অনুযায়ী, এই জলাভূমিতে কোনও রকম নির্মাণ নিষিদ্ধ। কিন্তু জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট ‘জয় হিন্দ’ জল প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছিল। উড়ালপুলের ক্ষেত্রেও মন্ত্রী সেই ‘জনস্বার্থে’র যুক্তিই দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, জলাভূমির সামান্য অংশের উপরে সেতুস্তম্ভ তৈরি হলে তাতে পরিবেশের বিশেষ ক্ষতি হবে না বলেও তাঁর দাবি। শোভনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সাড়ে বারো হাজার হেক্টরের জলাভূমি। তার নগণ্য পরিমাণ এ সবের কাজে লাগবে।’’ যদিও পরিবেশকর্মীদের মতে, ওই নির্মাণকাজের ফলে জলাভূমির বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
পরিবেশ দফতর সূত্রের খবর, শুধু উড়ালপুলই নয়, ধাপার ভাগাড় ভরে যাওয়ায় নতুন ভাগাড়ের জন্যেও জায়গা খুঁজছে পুরসভা। এই পরিস্থিতিতে ‘জনস্বার্থে’র কথা ভেবেই পূর্ব কলকাতার জলাভূমির একাংশে ভাগাড় তৈরির কথা মাথায় রয়েছে দফতরের শীর্ষ কর্তাদের। কিন্তু সেই পরিকল্পনাও আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।