দক্ষিণ দমদম পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
অনেক বাড়িতে ভাড়াটে রয়েছেন, কোথাও আবার বসতবাড়ির একাংশে চলছে অফিস, দোকান-সহ বাণিজ্যিক কাজকর্ম। অথচ, এই ধরনের কাজের কোনও প্রমাণ নেই পুরসভার খাতায়। ফলে, বিপুল পরিমাণ কর রাজস্ব আদায়ে মার খাচ্ছে পুর প্রশাসন। এ বার তাই এই ধরনের বসতবাড়ি চিহ্নিত করার কাজে নামতে চলেছেন দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভা সূত্রের খবর, আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বকেয়া সম্পত্তিকর আদায়ে জোর দেওয়ার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। সেই কাজ করতে গিয়েই পুর আধিকারিকেরা দেখেন, অনেক বাড়িতে ভাড়াটে আছেন। কোথাও বসতবাড়ি মেস হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, কেউ তাঁর বাড়িতে পেয়িং গেস্ট রাখছেন। অনেক বাড়ির একটি অংশে আবার দোকান বা ছোটখাটো অফিসও চলছে। বাসিন্দাদের একাংশ অতিরিক্ত উপার্জনের কথা মাথায় রেখে বসতবাড়িকে এমন ভাবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করছেন। অথচ, পুরসভার রেকর্ডে সংশ্লিষ্ট বাড়িটি শুধু বসতবাড়ি হিসেবেই নথিভুক্ত রয়েছে। ফলে, ওই সম্পত্তি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করলে যত টাকা কর হয়, সেই পরিমাণ কর আদায় করা যাচ্ছে না। পুরকর্তাদের অনুমান, এতে কয়েক লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি পড়ছে। সেই কারণে এমন সম্পত্তি চিহ্নিত করতে ওয়ার্ডভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ এবং পরে সেই অনুযায়ী কর ধার্য করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে এ ক্ষেত্রে একটি প্রশ্নও উঠছে। তা হল, পুর প্রশাসনের নজরদারি থাকলে বসতবাড়িকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার দিনের পর দিন চলে কী ভাবে? বাসিন্দাদের বক্তব্য, কোন বাড়ি বসতবাড়ি আর কোনটি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, নিয়মিত সেই সব তথ্য পরিমার্জন করা হয় কি না, সে সব নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, অনেকেই বসতবাড়ির একাংশ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করে উপার্জন বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন ক্ষেত্রে সম্পত্তিকর ধার্য করার সময়েই সেটি কোন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বিবেচনা করলে এই ধরনের সমস্যা এড়ানো যায়।
যদিও অভিযোগ পুরোপুরি মানতে চাননি পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, অনেক বাড়ি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতেই তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পুরসভার এক চেয়ারম্যান পারিষদ পার্থ বর্মা জানান, এমন সম্পত্তি চিহ্নিত করে নতুন করে কর ধার্য করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলি বিশ্লেষণ করা হবে। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।