আরজি করের ঘটনা ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’, মন্তব্য সৌরভের। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে মুখ খুললেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আরজি করে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করেছেন তিনি। শুক্রবার আরজি কর হাসপাতাল থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। হাসপাতালের মধ্যেই তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। রবিবার সেই নিয়ে প্রশ্নে মর্মাহত সৌরভ বললেন, “এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ছেলে হোক বা মেয়ে, কারও সঙ্গেই এমন হওয়া উচিত নয়।”
এনসিআরবির রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহর কলকাতা। তবে আরজি করের ঘটনার পর থেকে অনেকেই রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গ একটি নিরাপদ জায়গা বলেই মত সৌরভের। তিনি বলেন, “ভারতকে সাধারণত একটি নিরাপদ দেশ হিসাবেই গোটা বিশ্ব চেনে। বাংলাও নিরাপদ। সেখানে এ ধরনের ঘটনা হওয়া উচিত নয়।” তাঁর মতে, কোনও একটি নির্দিষ্ট ঘটনা থেকে সামগ্রিক চিত্র বিচার করা উচিত নয়। তবে প্রতিটি হাসপাতালে যে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি অত্যন্ত প্রয়োজন, সেটির দিকেও আলোকপাত করেন।
উল্লেখ্য, আরজি করের ওই ঘটনার পরের দিনই (শনিবার) অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছিলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র থেকেই অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়েছিল।
শুক্রবার হাসপাতালের চার তলার সেমিনার কক্ষে ওই মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনায় যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, হাসপাতালের কেউ নন। একটি সূত্রের দাবি, ধৃত পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। যদিও পুলিশ কমিশনার শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। অভিযুক্ত কী ভাবে চার তলার সেমিনার কক্ষে পৌঁছে গেলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযুক্তের গ্রেফতারির পরও বিক্ষোভ দমানো যায়নি। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের আঁচ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে বাংলা ও ভিন্রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালে।
এ সবের মধ্যেই রবিবার স্বাস্থ্য দফতর থেকে আরজি করের সুপারকে দায়িত্ব থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক সঞ্জয় বশিষ্ঠের বদলে এ বার সুপারের দায়িত্ব সামলাবেন আরজি করের ডিন চিকিৎসক বুলবুল মুখোপাধ্যায়। আরজি করের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, দোষীর ফাঁসির সাজার জন্য আবেদন করা হবে। এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে দোষীদের ‘এনকাউন্টার’ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কঠোর আইন’-এর কথাও বলেছেন তিনি। কলকাতার পুলিশ কমিশনারও জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের অপরাধী’।