প্রতীকী ছবি।
বহু টালবাহানার পরে পুজোর আগে মিলেছিল সন্ধ্যায় টেনেটুনে ঘণ্টাখানেকের ছাড়পত্র। শহরের বিভিন্ন পানশালা ও লাউঞ্জ বারে রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চালু হয়েছিল গানবাজনা।পুজোর পরে বার বার লালবাজারে দরবার করে সেই গানবাজনার সময়ের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন পানশালা মালিক থেকে ব্যান্ড লিডার সংগঠনের কর্তারা। কিন্তু বুধবার থেকে সে গুড়েও বালি। আবগারি দফতরের হস্তক্ষেপে আচমকাই গানবাজনা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা হয়ে গিয়েছে।
এ নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে সকলেই। লালবাজারের তরফে বলা হয়েছে, বিষয়টি তাদের জানা নেই। আবগারি দফতরের কোনও লিখিত নির্দেশিকা এখনও পর্যন্ত হাতে পাননি পানশালা মালিকেরা। কিন্তু আবগারি কর্তাদের চটিয়ে গানবাজনা চালাতে চাইছেন না অধিকাংশ পানশালা মালিকই। এ ভাবে গানবাজনা রাতারাতি বন্ধ হলে বিপাকে পড়বেন এই পেশার সঙ্গে জড়িত কয়েক লক্ষ শিল্পী, কলাকুশলী এবং ডিজে।
চাঁদনি চক এলাকার একটি সাবেক চিনে রেস্তরাঁ তথা পানশালার মালিক তরুণ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘হঠাৎ কী ঘটল, মাথায় ঢুকছে না। বিকেলের দিকে আবগারি বিভাগের এক আধিকারিক জানালেন, সব বন্ধ করতে হবে। পুলিশও কিছু বলতে পারছে না।’’ সেক্টর ফাইভের একটি লাউঞ্জ বারের কর্তা বরীশ চৌধুরীও বলছেন, ‘‘আবগারি বিভাগের স্থানীয় ওসি-র কাছ থেকে একটি এসএমএস এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ আসা পর্যন্ত গানবাজনা করা বা গান বাজানো, কিছুই চলবে না।’’ আবার পার্ক স্ট্রিটের সাবেক পানশালার কর্ণধার আনন্দ পুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।’’ আবগারি বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘আবগারি কমিশনারের নির্দেশেই বিভিন্ন পানশালাকে গানবাজনা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘ভয়েই’ বেপরোয়া দৌড় লরির, বলছেন চালকেরা
আরও পড়ুন: আর কত কোল খালি হবে, বলছেন সন্তানহারা দুই মা
রাজ্যে সিনেমা হল, জলসা চালু হচ্ছে। রেস্তরাঁ চলছে। কিন্তু অতিমারি পরিস্থিতিতে বেছে বেছে পানশালার গানবাজনা বন্ধের পিছনে কী যুক্তি থাকতে পারে, তা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়। ব্যান্ড লিডারদের সংগঠনের সদস্য অর্জুন সোমের কথায়, ‘‘গানবাজনার ফ্লোরে দূরত্ব রাখা বা নাচানাচির ভিড় এড়িয়ে সুষ্ঠু ভাবেই সব কিছু চলছিল। কী হল, বুঝছি না!’’ ধর্মতলার একটি পানশালার শিল্পী মোনালিসা মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘বেছে বেছে আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা আর কত দিন চলবে?’’