Calcutta Medical College and Hopsital

জট কাটল না মেডিক্যালে, অনশন আন্দোলন শুরু পড়ুয়াদের

অনশনকারীদের ব্যানারে লেখা ছিল, তাঁদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হলে তার দায় কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্তৃপক্ষের। অনশন মঞ্চেই বইপত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে দেখা গিয়েছে ওই পাঁচ জনকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫০
Share:

প্রতিবাদ: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে অনশন শুরু পড়ুয়াদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

অধ্যক্ষ, সুপার থেকে বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-চিকিৎসকদের ঘেরাও করে রেখেও দাবি পূরণ হয়নি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিল ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেও তা স্থগিত করে দিয়েছে। সেই নির্বাচন-সহ আরও দু’টি দাবিতে এ বার অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশন শুরু করলেন ওই কলেজের এমবিবিএসের পাঁচ পড়ুয়া। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনও বলছেন, নির্বাচন করার অনুমতি তাঁরা দিতে পারবেন না। তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি লাগবে। তবে তাঁরা অনশন প্রত্যাহারের জন্য পড়ুয়াদের কাছে বার বার আবেদন করবেন।

Advertisement

বুধবারই বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁরা অনশন আন্দোলন শুরু করবেন। সেই মতো এ দিন বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ এমবিবিএসের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র রণবীর সরকারের নেতৃত্বে আরও চার জন প্রিন্সিপালের অফিস লাগোয়া বারান্দায় অনশন শুরু করেন। অনশনকারীদের ব্যানারে লেখা ছিল, তাঁদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হলে তার দায় কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্তৃপক্ষের। অনশন মঞ্চেই বইপত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে দেখা গিয়েছে ওই পাঁচ জনকে। এমনকি, অন্যেরাও তাঁদের ঘিরে বসে নিজেদের পড়াশোনা চালিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের তরফে ডাক্তারির চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র অনিকেত কর বলেন, ‘‘নিরুপায় হয়েই আজ এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সকলে পড়তে এসেছি, রাজনীতি করতে আসিনি। কিন্তু ন্যূনতম দাবি তো থাকবে। সেটাই জানিয়েছিলাম।’’

অনিকেত-সহ সকলেরই বক্তব্য, ‘‘রোগী, নার্স, চিকিৎসক— কারও সঙ্গেই আমাদের কোনও বিবাদ নেই। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি মানছেন না। বুধবার আলোচনা করতে গেলেও অধ্যক্ষ চলে গিয়েছিলেন।’’ যদিও এ দিন অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, সুপার অঞ্জন অধিকারী-সহ শিক্ষক-চিকিৎসকেরা অনশন মঞ্চে এসে কথা বলেন পড়ুয়াদের সঙ্গে। কিন্তু তাতে সায় দেননি বিক্ষোভকারীরা। এমনকি, হাসপাতালের মেডিক্যাল দলের পরিষেবা নিতেও অস্বীকার করেছেন অনশনকারীরা। ইন্দ্রনীল জানান, গত ৬ ডিসেম্বর কেন তিন ঘণ্টার জন্য কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার বন্ধ ছিল এবং অন্যত্র পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আবার, পড়ুয়ারা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মারধর ও হুমকির যে অভিযোগ তুলছেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

এ দিকে, পড়ুয়াদের প্রশ্ন, ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছিল কেন? অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘এর আগে ওঁরা পণবন্দির মতো করে রেখেছিলেন। আমরা ওঁদের কথা শুনে তারিখ দিয়েছিলাম। কিন্তু তা পিছিয়ে দেওয়া যাবে না, এমন তো নয়। কলেজ কাউন্সিল সব করতে পারে না। এটাও বুঝতে হবে। সব কিছুর জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ প্রয়োজন।’’ অঞ্জন জানান, পড়ুয়াদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, নির্বাচিত বা মনোনীত ‘স্টুডেন্টস বডি’ তৈরি করতে। কিন্তু তাতেও তাঁরা রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশের কলেজে এমন মনোনীত স্টুডেন্টস বডি রয়েছে। যে কোনও মেডিক্যাল কলেজের দু’টি মূল লক্ষ্য হল, রোগী-পরিষেবা ও পঠনপাঠন। সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement