সমাজমাধ্যমে ঘুরছে এমনই মিম। ছবি: সংগৃহীত
তাপপ্রবাহের আঁচ পেতে বাড়ির বাইরে বেরোতে হবে না। সমাজমাধ্যমে উঁকি দিলেই রীতিমতো বোঝা যাচ্ছে, প্রবল গরমে কেমন কাহিল বঙ্গজীবন। তবে ঘেমেনেয়ে ক্লান্ত শরীরেও রসবোধের কমতি নেই। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে সেই রসিকতাতেই যেন নেটপাড়ায় খোঁজ খানিক স্বস্তির।
কার রচনা, সেই খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল একটি লেখা। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে স্বভাব-চরিত্রের বদলে যাওয়া নিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, ‘চল্লিশ পার হওয়ার পরে খুব কষ্ট হতে থাকে। কিছুই ভাল লাগে না। যখন তিরিশ ছিল, তখন কত উৎসাহ ছিল। যখন খুশি, যেখানে খুশি যাওয়ার ইচ্ছে হত। যখন কুড়ি ছিল, তখন তো কথাই ছিল না। যতই পরিশ্রম করি না কেন, কখনও ক্লান্ত লাগত না। এখন তো আর কিছুই ভাল লাগে না। পঁয়তাল্লিশ পেরিয়ে গেলে কী হবে, সেটা ভাবতেই আমার খুব ভয় হচ্ছে।’ এমন কয়েকটি বাক্যের পরেই মোক্ষম চমক। বেশ অনেকটা শূন্যস্থানের পরে লেখা, ‘বয়সের কথা বলছি না, তাপমাত্রার কথা বলছি!’
কেবল তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে শুকনো গরম নয়, আমজনতাকে কাহিল করে দিচ্ছে অস্বস্তিকর আর্দ্রতাও। একটুতেই ঘেমে ক্লান্ত হয়ে কাজের শক্তি ফুরিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের যখন এমন অবস্থা, তখন উত্তরবঙ্গে দিন দুয়েক আগে কিছু কিছু জায়গায় সামান্য বৃষ্টি হয়ে সামান্য স্বস্তি মিলেছে। মঙ্গলবার রাতেও উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের নানা এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। তা নিয়েও ছড়িয়েছে মিম, ‘উত্তরবঙ্গে চেরাপুঞ্জি, দক্ষিণবঙ্গে ভেজা গেঞ্জি!’ পালানোর তো পথ নেই। মানিয়ে নিতেই হবে। তা নিয়েই ফেসবুকে পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের রসিকতা, ‘গরমো রে, তুঁহু মম ঘাম সমান।’
দক্ষিণবঙ্গের যে ক’টি জেলা তীব্র গরমে নাকাল, তার মধ্যে রয়েছে হুগলি। সেখানকারই কোনও বাসিন্দা মজার ছলে বানিয়েছেন মিম, যেখানে দেখা যাচ্ছে সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে আর একটি গ্রহ, যেটি সূর্যের আরও কাছে। সেটির পরিচয়ে লেখা, ‘হুগলি’! কলকাতায় কেন এমন গরম, তার ‘ব্যাখ্যা’-সহ আর একটি পোস্ট ভাইরাল। সেটির বক্তব্য, কলকাতা লন্ডনে পরিণত হওয়ার পথে কুয়েতে বিমানযাত্রার বিরতি, তথা ‘লেওভার’ নিয়েছে। ভাইরাল কার্টুনে দেখা যাচ্ছে, যমালয়ে ফুটন্ত কড়াইয়ে নির্যাতিত ‘পাপী’ যমদূতকে বলছে, ‘‘কলকাতায় এর থেকে বেশি গরম ছিল কাকু।’’
তবে কেবল রসিকতাই নয়। সমাজমাধ্যমে উঠে এসেছে পরিবেশ নিয়ে প্রাসঙ্গিক প্রশ্নও। অনেকেই লিখেছেন, গরম নিয়ে কষ্টের কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই ভাবা উচিত কলকাতা ও অন্য শহরাঞ্চলে কী ভাবে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে। জলাশয় বুজিয়ে, গাছ কেটে নগরায়ণের পরিণতিই যে এমন অসহ্য আবহাওয়া, তা বলছেন অনেকেই। পিচ গলা রোদ্দুরে ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’ এই উপলব্ধিই যেন ‘বৃষ্টির বিশ্বাস’।