— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিম ভাগে এসপ্লানেড এবং হাওড়া ময়দানের মধ্যে শুরু হওয়া পরিষেবা প্রথম দিন থেকেই যাত্রী টানছে। তবে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই মেট্রো নিয়মিত যাত্রীদের এখনও পুরোপুরি মেট্রোমুখী করে তুলতে পারেনি বলেই সূত্রের খবর। প্রথম কয়েক দিনে গঙ্গার নীচে সুড়ঙ্গপথে মেট্রো সফর নিয়ে যাত্রীদের যে উন্মাদনা ছিল, তা প্রত্যাশিত ভাবেই খানিকটা থিতিয়ে এসেছে। মেট্রোর দৈনিক যাত্রী সংখ্যাও তাতে প্রথম কয়েক দিনের তুলনায় কয়েক হাজার কমেছে। শুরুর দিকে ওই সংখ্যা ৬০-৭০ হাজার অতিক্রম করে গেলেও এখন তা ৫০ হাজারের আশপাশে থাকছে বলে খবর।
ওই রুটে নিয়মিত যাত্রীদের একটা বড় অংশ কিউআর কোড নির্ভর কাগজের টিকিট অথবা টোকেন কিনে সফর করছেন বলে জানিয়েছেন মেট্রো কর্তারা। পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে প্রায় ১০ দিন কেটে গেলেও ওই পথে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারকারী যাত্রীর সংখ্যা কমবেশি ৫০০ জন মাত্র, যা খানিকটা ভাবাচ্ছে মেট্রো কর্তাদের। এ নিয়ে আরও বেশি প্রচারের উপরে জোর দিতে উদ্যোগী হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা যাত্রীদের কাছে তুলে ধরতে চান তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে এক মেট্রো কর্তা জানান, উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো পথে কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে দৈনিক যেখানে সাড়ে তিন লক্ষ যাত্রী স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করেন, সেখানে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় এসপ্লানেড থেকে হাওড়া ময়দানের মধ্যে পাঁচশোরও কম যাত্রী ওই কার্ড ব্যবহার করছেন। নিত্যযাত্রীদের একাংশের মতে, ফেরি পরিষেবা ব্যবহার করতেন যে সব যাত্রী, তাঁদের অনেকেই এখনও মেট্রোর বদলে ফেরিতে আস্থা রাখাই বেশি পছন্দ করেছেন। ওই যাত্রীদের মতে, হাওড়া স্টেশনে নেমে মেট্রো ধরার ক্ষেত্রে অথবা মেট্রো থেকে নেমে ট্রেন ধরার ক্ষেত্রে তাঁদের অনেকটা পথ বেশি হাঁটতে হচ্ছে। এ ছাড়াও ফেরির ভাড়া গড়ে ৬ টাকা। মেট্রোর ভাড়া সেখানে ১০ টাকা। এর পাশাপাশি, টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ অপেক্ষা এবং স্মার্ট কার্ডের জন্য বাড়তি টাকা গচ্ছিত রাখার খরচকেও যাত্রীদের একাংশ এই অনীহার জন্য দায়ী করেছেন।
এই সব নানা কারণে বাইরে থেকে আসা যাত্রীরা মেট্রোকে বেছে নিলেও নিয়মিত যাত্রীদের এখনও পুরোপুরি পাশে পাচ্ছে না মেট্রো। হাওড়ায় সাবওয়ে তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলে যাত্রীদের শহরতলির ট্রেন থেকে নেমে মেট্রো ধরা বা মেট্রো থেকে নেমে ট্রেন ধরার ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা হবে।
ব্যবসায়িক কাজে আসা বাসের যাত্রীরাও সঙ্গে বিভিন্ন পণ্য থাকায় বাসকেই এগিয়ে রাখছেন। তবে, মেট্রোয় দু’টি ট্রেনের ব্যবধান কমে আসা ছাড়াও অন্যান্য কিছু অসুবিধা দূর হলে মেট্রোয় যাত্রীর সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।