ইতিমধ্যে হাওড়া, শিপিং কপোর্রেশন ও ফেয়ারলি প্লেসে মোট ১২টি মেশিন বসানো হয়েছে। ছবি: পিটিআই।
কাগজের টিকিটের দিন শেষ। মেট্রোর মতো এ বার ফেরিঘাটেও স্মার্ট কার্ড ও টোকেন চালু করছে রাজ্য পরিবহণ নিগম। লক্ষ্য যাত্রী পরিষেবার উন্নতির পাশাপাশি রাজস্ব বৃদ্ধি। প্রাথমিক ভাবে এ জন্য হাওড়া থেকে শিপিং কপোর্রেশন বা মিলেনিয়াম পার্ক ও হাওড়া থেকে ফেয়ারলি লঞ্চঘাট পর্যন্ত মোট তিনটি জায়গায় স্মার্টকার্ডের মেশিন বসানো হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সেগুলির পরীক্ষাও শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই উদ্বোধন হওয়ার কথা।
হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াতের জন্য জলপথ পরিষেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুই শহরের মধ্যে এই জলপথ পরিষেবা দেয় মূলত দু’টি সংস্থা। একটি হল পরিবহণ দফতর এবং অন্যটি হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। রাজ্য পরিবহণ দফতরের লঞ্চ চলে হাওড়া-ফেয়ারলি, হাওড়া-শিপিং ঘাট-সহ আরও কয়েকটি রুটে। বছর তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে লঞ্চঘাট ও জেটিগুলির উন্নতির পাশাপাশি ফেরিঘাটগুলির আধুনিকীকরণের কাজ শুরু করে রাজ্য পরিবহণ দফতর।
রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘তখন থেকেই আমরা কাগজের টিকিটের বদলে ফেরিঘাটগুলিতে স্মার্ট কার্ডের মেশিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিই। এই মেশিনগুলি চালু হলে যাত্রীদের যেমন সুবিধা হবে তেমনি বিনা টিকিটের যাত্রীর সংখ্যাও কমবে।’’ দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে হাওড়া, শিপিং কপোর্রেশন ও ফেয়ারলি প্লেসে মোট ১২টি মেশিন বসানো হয়েছে। প্রতিটি ফেরিঘাটে বসেছে ৩টি করে মেশিন। পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, ওই মেশিনগুলি চালু হলে মূলত তিনটি সুবিধা হবে— ১) প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে টিকিটের ছেঁড়া অংশ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে না। কাগজ কেনার খরচ কমবে। ২) বিনা টিকিটে যাত্রীর সংখ্যা কমবে। কারণ স্মার্ট কার্ড বা টোকেন না থাকলে গেট খুলবে না। এবং ৩) রাজস্ব আদায় অনেক বাড়বে।
রাজ্য পরিবহণ দফতরের ট্রাফিক অফিসার তাজ মহম্মদ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারি সংস্থা ওয়েবেল এই কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। মেশিন বসানো থেকে ট্রায়াল— সবই ওই সংস্থা করছে। এ জন্য কম্পিউটারচালিত নতুন টিকিট কাউন্টার তৈরি হয়েছে। সেখান থেকেই সমস্ত বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’’
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো ব্যবস্থাটাই করা হয়েছে মেট্রোর মতো। সারা মাসের টিকিটের জন্য স্মার্ট কার্ড কিনতে হবে এবং দৈনন্দিন টিকিটের জন্য টোকেন দেওয়া হবে। কিন্তু এই ব্যবস্থা করায় তো মেট্রোয় বারবার মেশিন খারাপ হয়ে গিয়েছে, বহু টোকেনের হদিস মিলছে না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়েবেলের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘এ জন্য আমরাই এর দেখভাল করবো। সমস্যা হলে মিটিয়ে দেব। এ জন্য আমাদের লোকজন সব সময় থাকবে।’’
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, চলতি মাসেই উদ্বোধনের কথা থাকলেও গঙ্গাসাগর-সহ অন্যান্য কাজের জন্য তা করা যায়নি। তবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এই মেশিন ও নতুন টিকিট ঘরের উদ্বোধন হয়ে যাবে।