মাথা মুড়িয়ে ফেললেন এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী। —নিজস্ব চিত্র।
অভিনব প্রতিবাদ!
১০০০ দিন
কেটেছে রাস্তায়। চাকরি জোটেনি। নবম থেকে দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত
চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান অব্যাহত। আর শনিবার ধর্মতলার সেই ধর্নামঞ্চে মাথা
মুড়িয়ে প্রতিবাদ করলেন এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী। ভেঙে পড়লেন কান্নায়। আবেদন
করলেন, অবিলম্বে তাঁর মতো চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হোক। শাসক এবং
বিরোধীদের কাছে রাসমণি পাত্র নামে ওই চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন, ‘‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আপনারা সবাই আমাদের
সমস্যার সমাধান করুন...। কেউ শুনতে পাচ্ছেন? আমাদের চাকরি দিন।’’
অন্য দিকে, চাকরিপ্রার্থীদের এই ধর্না তথা প্রতিবাদ নিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘নাটক চলছে।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘এ রাজ্যে দুঃশাসন, কুশাসন চলছে।’’
রাসমণিদের অভিযোগ, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছেন না। অযোগ্যরা চাকরি করছেন। আর আইনের জট কাটানোর ক্ষমতা কেবলমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে বলে মনে করছেন এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীরা। বুকে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এক চাকরিপ্রার্থী রাসমণিকে দেখিয়ে বলেন, ‘‘আর কী কী ভাবে প্রতিবাদ করলে আমরা চাকরি পাব!’’ আর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘এখন মাথার চুল দিলাম আমরা। এ বার চাকরির দাবিতে জীবনও দেব। তখন হয়তো চাকরি দেবে এই সরকার!’’ তাঁরা শাসকদলের সাংসদ সৌগতের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন।
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে মাথা মুড়িয়ে প্রতিবাদ রাসমণি পাত্রের। —নিজস্ব চিত্র।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ২০১৬ সালের এসএলএস-টির নম্বরভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সামনের সারির মেধাকে বঞ্চিত করে পিছনের সারির প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে। এবং এসএমএসের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ২৯ দিন অনশন করেছিলেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও তাঁরা চাকরি পাননি— এই অভিযোগে আবার অনশনে বসেন কয়েকশো যুবক-যুবতী। ২০২১ সালে সল্টলেকে ১৮৭ দিন ধর্না দেন। তার পর গত ১০০০ দিবারাত্রি কেটেছে রাস্তায়। কিন্তু চাকরি হয়নি। অনশন মঞ্চে ১০০০ দিনে অন্য রকম ভাবে প্রতিবাদ করে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন রাসমণিরা।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, ধর্নায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালত যা যা নির্দেশ দিচ্ছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হচ্ছে। তবে চাকরিপ্রার্থীদের এই ধর্না এবং প্রতিবাদ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।