ধর্না অবস্থানে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। রয়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। রবিবার রাতে ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ্তা চৌধুরী সরকার।
কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যাওয়া মিছিল শেষ হওয়ার পরে খানিকটা আচমকাই ধর্না কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। আরজি কর-কাণ্ডে বিচার চেয়ে রাত ৮টা নাগাদ রানি রাসমণি অ্যাউিনিউয়ে ধর্নামঞ্চে বসেছিলেন ‘আমরা তিলোত্তমা’ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। মিছিলের মতোই ধর্নায় শামিল হয়েছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সোহিনী সরকারের মতো টলিউডের অভিনেত্রীরা। ঘোষণা অনুযায়ী, ভোর ৪টেয় ধর্না কর্মসূচি শেষ হয়। তবে উদ্যোক্তাদের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
‘লড়াই চালানোর’ ইঙ্গিত রয়েছে স্বস্তিকার ফেসবুক পোস্টেও। ভোরবেলা তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, “বাড়ি ফিরছি। আপনারা যাঁরা আজ ঘুমোলেন, কাল জাগবেন। লড়াই চালিয়ে যেতেই হবে। বিচার না আসা পর্যন্ত।” তবে উদ্যোক্তাদের তরফে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে একটি সূত্রের খবর, আগামী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ধর্না কর্মসূচি চলতে পারে। তবে যানজটের কথা মাথায় রেখে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ থেকে সরিয়ে এনে কাছাকাছি কোনও ফাঁকা জায়গায় ধর্নামঞ্চ তৈরি করা হতে পারে।
রবিবার আরজি কর-কাণ্ডে সব দোষীর বিচার চেয়ে ‘আমরা তিলোত্তমা’র ব্যানারে অরাজনৈতিক মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। মিছিলে বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন মানুষের যোগদান ছিল চোখে পড়ার মতো। মিছিলে সাধারণের ভিড়ে মিশেই বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায় টলিউডের একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রীকেও। যোগ দিয়েছিলেন অপর্ণা সেন, সৃজিত মুখোপাধ্যায়রাও। সন্ধ্যার কিছু আগে মিছিল ধর্মতলায় পৌঁছনোর পর জুনিয়র ডাক্তারেরা কিছু কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। তার পর উদ্যোক্তারা জানান, ভোর ৪টে পর্যন্ত ধর্না চলবে। মিছিলের ভিড় খানিক পাতলা হয়ে গেলেও অনেকেই ঠায় বসে থাকেন রাস্তায়। ভোর ৪টের সময়েও ধর্নামঞ্চে স্বস্তিকা, সোহিনী, বিদীপ্তার সঙ্গেই দেখা যায় দেবলীনা দত্ত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চিত্রপরিচালক বিরসা দাশগুপ্তকে।
কখনও কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহকপাট’, কখনও সলিল চৌধুরীর গানে রাতভর জেগে ছিল ধর্নামঞ্চ। বিভিন্ন সময়ে মাইক হাতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন জন। সেখানে দেখা যায়, গত ১৪ অগস্ট ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা রিমঝিম সিংহকেও। প্রায় প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্যে জানান, আরজি কর-কাণ্ডে বিচার না মিললে তাঁদের আন্দোলনের পথ থেকে টলানো যাবে না। রাস্তায় আলপনার মাধ্যমে বিচারের স্লোগান লিখে দেওয়া হয়।
রাতে ধর্নামঞ্চে এক মত্ত যুবক ঢুকে পড়ে মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ এসে সেই যুবককে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। প্রথম তাঁকে একটি পুলিশ কিয়স্কে নিয়ে গিয়ে বসানো হয়। পরে পুলিশের ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।