প্রয়াত মাধবচন্দ্র দাস
পারিবারিক দুর্ঘটনায় ভাইফোঁটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে আগেই। কিন্তু স্ত্রী ভাইকে ফোঁটা দেবেন। তাই মঙ্গলবার সকাল সকাল বাজার করতে গিয়েছিলেন ভাঙড় কাশীপুরের বাসিন্দা মাধব দাস (৩৫)। তবে বাজার করে এ দিন তাঁর আর ঘরে ফেরা হল না। বানতলায় এক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। মাধবের সঙ্গেই ছিলেন প্রতিবেশী চন্দ্রনাথ ঘোষ (৪৯)। চন্দ্রনাথের অপেক্ষায় ভাইফোঁটার থালা সাজিয়ে লাউহাটিতে নিজের বাড়িতে বসে ছিলেন দিদি কাজল ঘোষ।
যমের দুয়ারে কাঁটা ফেলতে ভাইয়ের কপালে আর ফোঁটা দিতে পারেননি কাজল। ফোনে ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে সব ফেলে বাপের বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন তিনি। চন্দ্রনাথের ভাগ্নে বিকাশচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘মা মামার জন্য অনেক ক্ষণ পথ চেয়ে বসেছিল। এ দিকে, মামা আসার বদলে এল তাঁর মৃত্যু সংবাদ!’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে দুর্গাপুজোর সময়ে মাধবের এক ভাই মারা যান। তার পর থেকে ভাইফোঁটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বানতলায় মাধবের জামাইবাবু
সাধন দাসের মাংসের দোকান রয়েছে। স্ত্রী সীমা তাঁর ভাইদের ফোঁটা দেবেন। সেই উপলক্ষে বাড়িতে খাওয়াদাওয়া হবে। তাই মাধব এ দিন জামাইবাবুর দোকান থেকেই মাংস আনতে গিয়েছিলেন। পাঁচ কিলোগ্রাম মাংস কেনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি আড়ৎ থেকে মাছও কিনেছিলেন তিনি। মাছ-মাংস নিয়ে স্ত্রী এবং ছেলের সঙ্গে আমডাঙায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল এ দিন মাধবের। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এ দিকে, ফের উৎসবের সময়ে পরিবারের আরও এক সদস্যকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মাধবের পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মাধব ও চন্দ্রনাথ দু’জনেই পূর্ব-পরিচিত। তাঁরা একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ার পাশাপাশি রাজারহাটে
বৈদিক ভিলেজে একসঙ্গে চাকরিও করেন। সেই সূত্রেই চন্দ্রনাথের মোটরবাইকে সওয়ার হয়ে বানতলায় গিয়েছিলেন মাধব। মোটরবাইকটি চালাচ্ছিলেন চন্দ্রনাথ।