Traffice Police

Traffic police: অসুস্থতায় তিন দিনের বেশি ছুটিতে জবাবদিহি ট্র্যাফিক পুলিশে

৬০ দিনের বেশি কেউ এই কারণে ছুটিতে থাকলে তাঁকে যেতে হবে ডিসি-র অর্ডারলি রুমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২২ ০৬:৪৬
Share:

জ্যে ট্র্যাফিক পুলিশের ৫১ শতাংশ পদ শূন্য। সেই ঘাটতি মেটাতেই ছুটিতে কোপ কি না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। ফাইল ছবি

ছুটি নিয়ে নতুন ঘোষণা কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশে। অসুস্থতার কারণে তিন দিনের বেশি ছুটিতে থাকলেই এ বার থেকে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর এবং সার্জেন্টদের যেতে হবে ডিসি ট্র্যাফিকের ‘অর্ডারলি রুমে’ (জবাবদিহির ঘর)। সেখানে অসুস্থতা সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার পাশাপাশি ছুটি নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে।

Advertisement

ইতিমধ্যেই এই নির্দেশ ঘিরে বাহিনীর মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে প্রতিদিনই অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকে, সেখানে অসুস্থতায় ছুটির ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত হিসাবে জবাবদিহির নিদান? প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘বুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর (বিপিআরডি) একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যে ট্র্যাফিক পুলিশের ৫১ শতাংশ পদ শূন্য। সেই ঘাটতি মেটাতেই ছুটিতে কোপ কি না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার সমস্ত ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি এবং ট্র্যাফিক পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারদের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশিকাটি জারি করা হয়েছে। তাতে অসুস্থতার কারণে সাব-ইনস্পেক্টর এবং সার্জেন্টদের তিন দিনের বেশি ছুটির ক্ষেত্রে অর্ডারলি রুমে যেতে বলা হলেও অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর, কনস্টেবল এবং ট্র্যাফিক পুলিশের গাড়িচালকদের ছাড় থাকছে ৬০ দিন। বিভাগীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার মনে করলে এর মধ্যে তাঁদের কাউকে ডাকতে পারেন অর্ডারলি রুমে। কিন্তু ৬০ দিনের বেশি কেউ এই কারণে ছুটিতে থাকলে তাঁকে যেতে হবে ডিসি-র অর্ডারলি রুমে।

Advertisement

ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, পুলিশে অসুস্থতার কারণে তিন দিনের বেশি ছুটি হলে সেটিকে ‘ওভার স্টে’ হিসাবে ধরা হয়। এ জন্য মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা করতে হয়। এর পরে কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে, সেখানে চিকিৎসক ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দিলে তবেই কাজে যোগ দিতে পারেন সংশ্লিষ্ট ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। তিন দিনের বেশি যে ক’দিন তিনি ‘ওভার স্টে’ করলেন, তা বাদ যায় ‘আর্নড লিভ’ থেকে। বছরে মোট পাঁচ বার অসুস্থতার কারণে তিন দিনের ছুটি নিতে পারেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। তবে এর পরেও অনুমতি ছাড়া কেউ ৩০ দিনের বেশি ছুটিতে থাকলে তাঁর বেতন বন্ধের সুপারিশ করা হতে পারে। এই অনুপস্থিতির সংখ্যা ৪৫ দিন পেরিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হতে পারে। তবে অসুস্থতার কারণে তিন দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলেই এমন পদক্ষেপ এই প্রথম।

পুলিশকর্মীদের অনেকেরই দাবি, এত দিন কোনও পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে অর্ডারলি রুমে ঊর্ধ্বতন পুলিশকর্তারা জবাব চাইতেন। দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় তদন্ত, জরিমানা, পদোন্নতি না হওয়া বা বদলির মতো পদক্ষেপ করা হত। তাঁদের আশঙ্কা, ছুটির জন্যেও জবাবদিহি করতে হলে ভয়ে অনেকে সম্পূর্ণ সুস্থ না হয়েই এ বার থেকে কাজে যোগ দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ওই অবস্থায় রাস্তায় ডিউটি করতে গিয়ে তাঁর আরও বড় বিপদ হতে পারে। আবার করোনা-পরবর্তী সময়ে রোগ নিয়েই কোনও ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী তড়িঘড়ি কাজে যোগ দিলে আরও অনেকের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। অসুস্থতার কারণে নেওয়া ছুটির জন্য এমন পদক্ষেপে পুলিশকর্মীদের মধ্যে রাগ, অবসাদ বৃদ্ধির আশঙ্কাও করছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, ছুটি নিয়ে সমস্যার জেরে সম্প্রতি উর্দিধারীর গুলি চালানোর মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই কিছু হবে না তো, সেই প্রমাদও গুনছেন অনেকে।

কলকাতা পুলিশের কর্তাদের যদিও দাবি, এর পরেও বৈধ কারণে ছুটি নিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে অসুস্থতার ছুতোয় যাঁরা দিনের পর দিন ছুটি নেওয়ার সুযোগ খুঁজতেন, তাঁরা এ বার কিছুটা সতর্ক হবেন। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) সুনীলকুমার যাদব বলেন, ‘‘আদতে ছুটি মঞ্জুরের প্রক্রিয়াকে সহজ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আগে এমন দীর্ঘ ছুটির জন্য বেতনে সমস্যা হত। এখন থেকে ডিসির অর্ডারলি রুমে এলেই ছুটি মঞ্জুরের প্রক্রিয়া দ্রুত হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement