দু’দিনেই বেহাল শ্রীভূমি ও গোলাঘাটার নয়া আন্ডারপাস

ভূমি ও গোলাঘাটা আন্ডারপাসের ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, কয়েকটি সিঁড়ির টালি পুরো ভাঙা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৬
Share:

ঝুঁকিপূর্ণ: গোলাঘাটা আন্ডারপাসে সিঁড়ি থেকে উঠে গিয়েছে টালি।

শ্রীভূমির পুজো উদ্বোধনের সময়েই চালু হয়ে গিয়েছিল শ্রীভূমি ও গোলাঘাটা আন্ডারপাস। কিন্তু তার কিছু দিনের মধ্যেই বেহাল দশা ওই দুই আন্ডারপাসের। কোথাও সিঁড়ির টালি উঠে গিয়েছে। কোথাও আবার নীচ দিয়ে জল বেরোনোয় সিঁড়ির সিমেন্টই ভেঙে ফেলা হয়েছে। এক জায়গায় তো সিঁড়ির টালিতে এত জল জমে রয়েছে যে, পথচারীরা যে কোনও মুহূর্তে পিছলে পড়তে পারেন। পুলিশ সূত্রের খবর, পুজোর সময়ে পথচারীদের কেউ কেউ টালিতে জমা জলে পা হড়কে পড়ে আহতও হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর মধ্যে তাড়াহুড়ো করে আন্ডারপাস দু’টি উদ্বোধন করতে গিয়েই সব দিকে নজর দেওয়া হয়নি। সেই কারণেই দিন কয়েকের মধ্যে এমন হাল।

Advertisement

শ্রীভূমি ও গোলাঘাটা আন্ডারপাসের ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, কয়েকটি সিঁড়ির টালি পুরো ভাঙা। সেখান দিয়ে দ্রুত নামতে গিয়ে যে কেউ হুমড়ি খেয়ে পড়তে পারেন। কোনও কোনও টালিতে পা দিলেই নীচে জমে থাকা জল বেরিয়ে আসছে। তাতে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে পথ। শ্রীভূমি আন্ডারপাস দিয়ে ছেলেকে নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন শাক্য মুখোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘‘আমার ছেলে টালির পড়ে থাকা জলে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিল। ভাঙাচোরা সিঁড়িতে ঠোক্কর খেয়েছি আমিও।’’

শাক্যবাবুর মতো অনেকেই আন্ডারপাস দিয়ে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছেন, জানালেন শ্রীভূমি আন্ডারপাসের নিরাপত্তাকর্মী সমীর মণ্ডল। বললেন, ‘‘মাটির নীচ থেকে জল উপরে উঠে আসছে। সেই জল আন্ডারপাসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। সেই জল বারবার মুছেও লাভ হচ্ছে না। এক জায়গা পরিষ্কার করছি, তো আর এক জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।’’

Advertisement

ভেঙে গিয়েছে গ্লোসাইন বোর্ড, শ্রীভূমি আন্ডারপাসে।

এ ভাবে জলের উপর দিয়ে হাঁটতে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য পুজোর সময়ে শ্রীভূমি আন্ডারপাসে কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষীরা কার্পেটের উপর দিয়ে হাঁটতে বলেছিলেন পথচারীদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘটে যায় তিনটি দুর্ঘটনা। দু’জন মহিলা ও এক বৃদ্ধ পা পিছলে পড়ে যান। তাঁদের অল্পবিস্তর আঘাতও লাগে। এলাকাবাসীর অভিযোগ,

পুজোর সময়ে কার্পেট বিছানো থাকলেও এখন সেই কার্পেট তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই পথচারীরা আবার অসুবিধায় পড়েছেন। তবু এখনও সমস্যার সমাধান হল না। তাঁরা স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসুকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। সুজিতবাবু দু’টি আন্ডারপাসের হালই দেখে গিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ, এখনও সমস্যার সুরাহা হয়নি। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে সুজিতবাবুকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজের।

শুধুই পড়ে থাকা জল বা ভাঙাচোরা সিঁড়ি নয়, শ্রীভূমি আন্ডারপাসে যে সমস্ত গ্লো-সাইনবোর্ডে বড় বড় করে সরকারি তরফে রাজ্যের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানের ছবি লাগানো হয়েছে, তার মধ্যে একটি ঝুলে পড়েছে। নিরাপত্তারক্ষী জানান, ঝুলে পড়া ওই গ্লো-সাইনবোর্ডে হাত দিলেই বিদ্যুতের ঝটকা খেতে হচ্ছে। তাই সেটি একটি টেবিল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। যাতে কেউ হাত না দিতে পারেন।

আন্ডারপাসের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বারাসত হাইওয়ে ডিভিশন ওয়ানের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কনকেন্দু সিংহ অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, ভাঙাচোরা সিঁড়ি বা জল ওঠার সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে। কনকেন্দুবাবু বলেন, ‘‘যে সমস্ত জায়গা থেকে জল বেরোচ্ছে, সেগুলি চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। জল যাতে না জমে, তার জন্য একটি পাম্পও লাগানো হবে।’’

—নিজস্ব চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement