বিপত্তি: এ ভাবেই ভেঙেছে শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
বানের ধাক্কায় ভাঙল হাওড়ার শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। বুধবার দুপুরের ওই ঘটনায় গ্যাংওয়ে এবং পন্টুনের লোহার শিকল ছিঁড়ে গিয়ে উল্টেছে গ্যাংওয়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। আপাতত ওই জেটি থেকে লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২০১৫ সালে বানের তোড়ে ভেঙেছিল শিবপুর জেটি। সেই সময়ে ভেসে যাওয়া শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি বা পন্টুনটি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন জেটির কাছে পাওয়া গিয়েছিল। এ দিন দুপুর ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ আসা বানের তোড়ে সে বারের মতো বহু দূরে ভেসে না গেলেও জেটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিবপুর জেটিঘাটে কর্তব্যরত ‘জলসাথী’র কর্মী নিতাই কয়াল জানান, বানের ধাক্কায় প্রথমে গ্যাংওয়ে ও পন্টুনের শিকল ছিঁড়ে যায়। পরে বানের তোড়ে গ্যাংওয়েটি উল্টে কিছু দূরে সরে যায়। ফের জলের ধাক্কাতেই সেটি সোজা হয়ে যায়।
নিতাই বলেন, ‘‘বানের তোড়ে চোখের নিমেষে শিকল ছিঁড়ে গ্যাংওয়ে সরে গেল। উল্টে গিয়ে ফের সোজা হল সেটি। কেউ জেটিতে থাকলে বড় বিপদ ঘটত।’’ বান আসার আগাম খবর থাকায় এ দিন প্রায় এক ঘণ্টা আগে থেকেই জেটিতে লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শিবপুরের ওই জেটি থেকে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমিতির লঞ্চ চলে। কলকাতায় যাতায়াতের জন্য ব্যস্ত সময়ে প্রচুর যাত্রী ওই লঞ্চ পরিষেবা ব্যবহার করেন।
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমিতির প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য আমানুল হিলাল জানান, ২০১৫ সালের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শিবপুর, বাউড়িয়া লঞ্চঘাটের জেটি সংস্কার করা হয়েছিল। এ দিন দুর্ঘটনার পরে পরিবহণ দফতরের কর্তারা গিয়ে শিবপুরের ভাঙা জেটি পরীক্ষা করে দেখেন। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, আগামী দিনে যাতে ওই জেটি বানের চাপ নিতে সক্ষম হয়, তেমন ভাবেই সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ দিনের ঘটনার জন্য গঙ্গায় ফেলা বোল্ডারকেই দায়ী করেছেন আমানুল। তিনি বলেন, ‘‘বানের জল ওই বোল্ডারে ধাক্কা খেয়ে গ্যাংওয়ে ও পন্টুনের ক্ষতি করেছে।’’
তবে এ দিন রাত ১২টায় আরও একটি বড় বান আসার খবর থাকায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আমানুলেরা। সেই সময়ে ভাঙা জেটি ফের যাতে ভেসে না যায় পরিবহণ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা তারই ব্যবস্থা করেছেন বলেও জানান আমানুল। পাশাপাশি গভীর রাতের বানে বাউড়িয়া, নাজিরগঞ্জ জেটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকে নজর রেখেছেন দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা।