শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে শুক্রবার মিছিলও করবে বিজেপি। মেধা তালিকায় রয়েছেন ১৫ হাজার ২৮৪ জন।
নীলবাড়ি দখল করতে পারলে বিজেপি সরকার রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তদন্ত করবে। অগস্ট মাসের মধ্যে গঠিত হবে সেই কমিশন। বুধবার রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পাশে বসিয়ে এমনই ঘোষণা করলেন দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। বিজেপি-র অভিযোগ, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের জন্য সদ্য প্রকাশিত মেধা তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। এর পিছনে বড় মাপের দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছে বিজেপি। একই সঙ্গে দলের ঘোষণা, আগামী শুক্রবার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে একটি মিছিল করবে বিজেপি।
প্রসঙ্গত সোমবার গভীর রাতে মেধাতালিকা প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। গত ২৩ ডিসেম্বর পর্ষদ ১৬ হাজার ৫০০টি শূন্য পদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বলা হয়েছিল যাঁরা টেট উত্তীর্ণ এবং যাঁদের প্রশিক্ষণ রয়েছে শুধু তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন। সোমবার প্রকাশিত মেধা তালিকায় রয়েছেন ১৫ হাজার ২৮৪ জন।
মধ্য রাতে কেন এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে শমীক বলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের বয়স আর কয়েক মাস। ক্ষমতা থেকে যাওয়ার সময়েও একটা দুর্নীতি করে গেল। ক্ষমতায় এসেই আমরা এই দুর্নীতির তদন্তে একটি কমিশন গঠন করব।’’ শমীকের আরও দাবি, ‘‘যে পরীক্ষার ভিত্তিতে এই মেধা তালিকা তাতে ৬টি ভুল প্রশ্ন ছিল। তা নিয়ে একটি মামলা হয়। এখনও যার শুনানি চলছে। মার্চ মাস নাগাদ আদালত রায় জানাতে পারে। তার আগে ভোটের মুখে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তার মধ্যে এমন কয়েক জনের নাম রয়েছে যাঁরা ভুল প্রশ্নের জন্য আদালতে গেছেন।’’ এর ফলে যাঁরা আদালতে যেতে পারেননি তাঁদের প্রতি বঞ্চনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ শমীকের। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তবে কি মামলা করতে পারাটাও চাকরি পাওয়ার অন্যতম যোগ্যতা?’’
বিজেপি-র আরও অভিযোগ, প্রকাশিত তালিকা মেধা অনুসারে করা হয়নি। চাকরিপ্রার্থীরা ওয়েবসাইটে নিজেদের রোল নম্বর দিলে শুধু নাম রয়েছে কি নেই সেটুকুই দেখাচ্ছে। তালিকার কোথায় নাম তা কেন দেখা যাচ্ছে না প্রশ্ন তুলে শমীকের দাবি, ‘‘অবিলম্বে পিডিএফ ফরম্যাটে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, দ্রুত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে গত ১১ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন। সেই ঘোষণার দু’মাসের মধ্যেই মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়। খুব তাড়াতাড়ি চাকরিপ্রাপকদের নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বলেও পর্ষদ সূত্রে জানা যায়। এখন সেই তালিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলল বিজেপি। যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে এবং তদন্ত কমিশন গঠন করে তখন কি বর্তমান তালিকা বাতিল হয়ে যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তর কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন শমীক। তিনি বলেন, ‘‘সেটা সেই সময় ঠিক হবে। তবে রাজ্য সরকার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যত দুর্নীতি করেছে এবং শাসক দলের নেতারা টাকার বিনিময়ে যত চাকরি দিয়েছেন সবের তদন্ত হবে।’’