—প্রতীকী চিত্র।
একে মোল্লার ভেড়িতে বায়ো মাইনিংয়ের কাজের জন্য জঞ্জাল ফেলা বন্ধ। নির্ভর করতে হয় কলকাতা পুরসভার ধাপার উপরে। তার উপরে জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের একাধিক গাড়ি ও ট্র্যাক্টর বিকল বা বাতিল হয়ে রয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে সল্টলেকের মতো পরিকল্পিত উপনগরীতে। রাস্তায় অনেক সময়ে জমে থাকছে আবর্জনা।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, আবর্জনা তোলার ট্র্যাক্টর ও গাড়ি মিলিয়ে ১৯টি যানবাহন বাতিল এবং বিকল হয়ে রয়েছে। বরাত দেওয়া হয়েছে নতুন গাড়ির। সল্টলেকের মতো পরিকল্পিত উপনগরীতে মাত্র পাঁচটি গাড়ি ভরসা বিধাননগর পুরসভার। তার মধ্যেও রয়েছে ভাড়ার গাড়ি। যার নিয়ন্ত্রণ সব সময়ে পুরসভার হাতে থাকে না। এর ফলে অনেক জায়গা থেকেই রাস্তায় আবর্জনা পড়ে থাকার অভিযোগ আসছে পুরসভার কাছে।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, চলতি মাসেই নতুন ১২টি গাড়ির দরপত্র চূড়ান্ত হওয়ার কথা। গাড়ি কেনা হয়ে গেলে সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবরাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভা নতুন গাড়ি কিনলে ভাড়ার গাড়ির ভরসা করতে হবে না। ভাড়ার গাড়ির ক্ষেত্রে যেমন সময়ের সমস্যা থাকছে, তার চেয়েও বেশি সমস্যা পুরসভার অধীন ধাপায় আবর্জনা ফেলতে যাওয়া। ধাপা বিধাননগর থেকে দূরে হওয়ায় অনেক সময়ে গাড়ি গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে পরের ট্রিপ আটকে যাচ্ছে। আবর্জনা পড়ে থাকছে।’’
একটি সমস্যার কথা অবশ্য আধিকারিকেরাও শুনেছেন। তা হল, সল্টলেকে গাড়ির অভাবের জন্য আবর্জনা নির্ধারিত জায়গায় ফেলার সময় বেঁধে দেওয়া হলেও অনেক সময়ে পুরসভার শ্রমিকেরা তা মানছেন না। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সময় বাঁধা হয়েছে, যাতে আবর্জনা ট্র্যাক্টর কিংবা ডাম্পারে উঠে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই শ্রমিকেরা সেই সময় বেঁধে কাজ করতে পারছেন না। গাড়ি না থাকলেও রাস্তায় আবর্জনা ফেলে দিচ্ছেন।’’ যদিও আধিকারিকদের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাটি, গাছ, ঘাসের মতো আবর্জনাই পড়ে থাকছে।
পুরসভার অন্দরের খবর, ১৫ বছরের বেশি হয়ে যাওয়ায় দূষণের কারণে ১৫টি গাড়ি পরিবহণ দফতরই বাতিল করে দিয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে। ওই সময়ে প্রথমে আটটি গাড়ি নিষিদ্ধ করে পরিবহণ দফতর। পরবর্তী সময়ে আরও সাতটি গাড়ি ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে যায়। যার জেরে দীর্ঘদিন ধরে জঞ্জাল অপসারণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। উৎসবের সময়ে গাড়ি ভাড়া নিয়ে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ চালানো হয়েছিল। পুর প্রতিনিধিদের একাংশ জানিয়েছেন, সংযুক্ত এলাকাগুলিতে ডাম্পার ঢুকবে না। সেখানে ট্র্যাক্টর পাঠাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে পুরসভার নিজস্ব ট্র্যাক্টরও বিকল। একমাত্র কার্যকর রয়েছে আবর্জনা তোলার ট্রলি।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ধাপায় আবর্জনা ফেলতে কলকাতা পুরসভার নির্ধারিত সময়ের উপরে নির্ভর করতে হয়। ধাপায় বিধাননগরের আবর্জনা ফেলার জায়গা পিছন দিকে। সেখানে গিয়ে মালপত্র ফেলে গাড়ি খালি করতে অতিরিক্ত সময় লাগে। সময় মতো না পৌঁছলে লরি ধাপাতেই আটকে থাকে। নতুন করে রাস্তা থেকে আবর্জনা তোলার উপায় থাকে না। আধিকারিকেরা জানান, ভাড়ার গাড়ি পুরসভার সময় মতো ট্রিপ করতে চায় না। খরচের দিকটাও রয়েছে। সব মিলিয়ে আবর্জনা অপসারণের কাজ যে ধাক্কা খেয়েছে, তা
মানছেন সকলে।