বারুইপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।—ফাইল চিত্র।
জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে কখনওই সে ভাবে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ মেলেনি তাঁদের। ভলিবল প্রতিযোগিতা তাঁদের সামনে এনে দিল সেই সুযোগ। জেলের ভিতরে ওই প্রতিযোগিতায় দুরন্ত ‘পারফর্ম’ করা বন্দি-খেলোয়াড়দের নিয়ে দল তৈরির পরিকল্পনা করছেন বারুইপুর জেল কর্তৃপক্ষের। বাইরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলতে যেতে জেলের বাইরে পা পড়তে পারে ওই দলের সদস্যদের। সে ক্ষেত্রে পেশাদার খেলোয়াড়দের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দেওয়ার সুযোগ পাবেন ওই বন্দি-খেলোয়াড়েরা।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর বারুইপুর জেলের উদ্বোধনের পরে বছর ঘুরে গিয়েছে। জেলের দ্বিতীয় অংশটি এখনও চালু না হলেও প্রথম অংশ রয়েছে প্রায় এগারোশো বন্দি। কিন্তু এত দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই বন্দিরা কোনও প্রতিযোগিতার স্বাদ পাননি। এই শীতে তাঁদের জন্য ভলিবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। আর সেখানেই খেলোয়াড় হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছেন একাধিক বন্দি।
বারুইপুর জেলের প্রথম আনুষ্ঠানিক এই প্রতিযোগিতায় ছিল মোট ১৮টি দল— বন্দিদের নিয়ে ১৭টি এবং জেলকর্মীদের একটি দল। সেই প্রতিযোগিতারই ফাইনাল ছিল রবিবার। সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের হারিয়ে জয়ী হয় জেলকর্মীদের দল। তবে প্রতিযোগিতায় ভাল খেলে নিজেদের প্রমাণ করা বন্দিদের আরও বড় সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন জেল কর্তৃপক্ষ। তার জন্য শুধু ফাইনালে জয়ী দলই নয়, ভাল খেলা বন্দিদের নিয়ে আস্ত টিম গড়ার কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ, জেলের গণ্ডি পেরিয়ে যে দল খেলতে যেতে পারে বাইরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। ফলে খেলার কারণে জেলের বাইরে পা পড়তে পারে ওইসব বন্দি-খেলোয়াড়দের।
অন্য দিকে, প্রেসিডেন্সি জেল ক্রিকেট লিগের ফাইনাল অবশ্য এ দিন গড়াল সুপার ওভার পর্যন্ত। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুপার ওভারে পরপর দু’টি ম্যাচে বাজিমাত করেছে ভারত। রবিবার ওই লিগের ফাইনালেও সুপার ওভারেই বিজয়ী দলের খেতাব ছিনিয়ে নিল একতা ইউনাইটেড দল।
গত ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রেসিডেন্সি জেল ক্রিকেট লিগ। রবিবার ছিল ফাইনাল। দরিয়া হাউস বনাম একতা ইউনাইটেডের ওই ম্যাচে প্রথমে ১৬ ওভারে দু’টি দলই করে ৮৩ রান। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। তখন ১৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রাখে একতা ইউনাইটেড দল, যা ছুঁতে পারেনি দরিয়া হাউস টিম।
বরাবরই উচ্চ মানের ক্রিকেট উপহার দিয়ে থাকেন প্রেসিডেন্সি জেলের বন্দি-ক্রিকেটারেরা। কিন্তু গত এক বছরে বেশ কিছু বন্দিকে অন্য জেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাই এ বারের প্রতিযোগিতার মান ততটা ভাল হয়নি। তবে কারা দফতরের কর্তাদের মতে, ‘‘খেলা শারীরিক এবং মানসিক ভাবে মানুষকে ভাল রাখে। পরস্পরের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি হয়। বন্দিরা তার ব্যতিক্রম নন। সে কারণেই বিভিন্ন জেলে নানা খেলার আয়োজন করা হয়।’’