খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল শিয়ালদহ আদালত। —ফাইল চিত্র।
নিজের এক বছরের ভাইপো এবং বৌদিকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল সত্য সাহা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই মামলায় শুক্রবার ওই ব্যক্তির ফাঁসির সাজা ঘোষণা করলেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়।
২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি উল্টোডাঙা থানার সুরেন সরকার রোডে খুন হন বুলু সাহা এবং তাঁর এক বছরের ছেলে ইন্দ্রজিৎ। তদন্তে জানা যায়, বুলুর স্বামী বিদ্যুতের ভাই সত্য এবং তাঁর স্ত্রী নন্দিতা ষড়যন্ত্র করে ওই দু’জনকে খুন করে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ছিল। সে কারণে ইন্দ্রজিতের জন্মদিনের দিন তাকে গলা টিপে খুন করা হয়। আর তার মা-কে ব্যায়াম করার সরঞ্জাম দিয়ে মারা হয় প্রথমে। পরে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। এর পর দু’জনের মৃতদেহ বস্তায় ভরে নির্জন জায়গায় ফেলে আসে সত্য।
পরে শিশুটির দেহ উদ্ধার হয় ক্যানাল ইস্ট রোডের ধরে খাল থেকে। তার মায়ের দেহ পাওয়া যায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি পরিত্যক্ত জায়গায়। সত্য এবং নন্দিতাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পারে, সম্পত্তির বিবাদের জেরেই তারা খুন করেছে। সত্য নিজের নামে সম্পত্তি লিখে নিতেই ওই কাণ্ড ঘটায়।
আরও পড়ুন: বলপ্রয়োগের ধারা যুক্ত ট্যাংরা মামলায়
‘টাকা দিতে পারি, অভিযোগকে গুরুত্ব দিক পুলিশ’
প্রথমে উল্টোডাঙা থানা, পরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ওই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয়। এই খুনের মামলার বিচারপর্ব চলে দীর্ঘ দিন। এ দিন শিয়ালদহ আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় ফাঁসির সাজা দিয়েছেন সত্য সাহার। তার স্ত্রী নন্দিতা সাহার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিশেষ সরকারি আইনজীবী মহম্মদ আবু বক্কর ঢালি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল অভিযুক্তরা। এ দিন তাদের সাজা ঘোষণা হয়। এই মামলায় ৪৬ জনা সাক্ষ্য দিয়েছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১, ৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে তারা। সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা।