খুচরোর আকাল, দিনভর নাকাল হাসপাতালে

কারও প্রেসক্রিপশনে ডেটল লেখা, কারও আবার সামান্য এক পাতা প্যারাসিটামল। তা নিয়েই বৃহস্পতিবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে চলে এসেছিলেন অনেকে। হাতে ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট। তাতেই যত গোলমাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫৪
Share:

কারও প্রেসক্রিপশনে ডেটল লেখা, কারও আবার সামান্য এক পাতা প্যারাসিটামল। তা নিয়েই বৃহস্পতিবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে চলে এসেছিলেন অনেকে। হাতে ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট। তাতেই যত গোলমাল। খুচরো দিতে দিতে ফতুর দোকানের কর্মীরা ওই নোট নিতে অস্বীকার করলেই দফায় দফায় বাধে বচসা। ক্রেতার দাবি, প্রেসক্রিপশন নিয়ে এলে ন্যায্য মূল্যের দোকান ৫০০ বা ১০০০ টাকা নিতে বাধ্য। আর দোকানির যুক্তি, টাকা নেওয়ার এবং খুচরো দেওয়ারও একটা সীমা থাকে। একই হাল প্রায় সব ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানেই।

Advertisement

বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতালের আউটডোরে এ দিনও ভিড় ছিল অন্য স্বাভাবিক দিনের তুলনায় কম। ই এম বাইপাসের একটি হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, ‘‘অন্য দিন এ রকম সময়ে আউটডোর টিকিট করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। মুখ তোলার সময় পাওয়া যায় না। কাল থেকেই অনেকটা ফাঁকা। এ রকম ক’দিন চলবে জানি না।’’ মধ্য কলকাতার এক নার্সিংহোমে নামী ডাক্তারদের দেখাতে সাধারণত তিল ধারণের জায়গা থাকে না। সেখানেও প্রায় মাছি তাড়ানোর দশা। কারণ একটাই, ফি-এ খুচরো টাকা দেওয়ার সমস্যায় অনেকেই অ্যাপয়ন্টমেন্ট বাতিল করেছেন।

খুচরোর জন্য রোগীদের ভুগতে হয়েছে এ দিনও। সল্টলেক লাগোয়া এক হাসপাতালে পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে পেসমেকার বসিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা মহম্মদ জালালউদ্দিন। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ-এর এই অধিকর্তা বুধবার হাসপাতালে ফলোআপের জন্য এসেছিলেন। কিন্তু ১০০ টাকার ৬টি নোট দিয়ে তিনি ৬০০ টাকার আউটডোর টিকিট করাতে পারেননি। তাই হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফিরে যেতে হয়।

Advertisement

এমন ছবির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এ দিন একাধিক হাসপাতালে। নিউ আলিপুরের একটি হাসপাতালের আউটডোরে এমন হয়রানির খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে এ দিন কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সাংবাদিকেরাও। তাঁদের মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিতে এ দিন ভিড় কম ছিল। মধ্য কলকাতার একটি ল্যাবরেটরির এক কর্মী বলেন, ‘‘অন্য দিন সকাল
১১টার মধ্যে রক্ত পরীক্ষার বিল-ই ১০০টির বেশি হয়ে যায়। এ দিন তা অনেক কম। যাঁরা এসেছেন, তাঁদের বেশির ভাগের সঙ্গেই রয়েছে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড। নগদ টাকায় কাজ হয়নি বললেই চলে।’’ একই ছবি ছিল হাজরা রোডের কাছে একটি নামী ল্যাবরেটরিতেও।

বাগরি মার্কেটে ওষুধের খুচরো-পাইকারি বিক্রেতা ও ডিস্ট্রিবিউটরদের ব্যবসাও মঙ্গলবারের সরকারি ঘোষণার পর থেকে প্রায় থমকে গিয়েছে। ‘ফার্মাসিস্টস অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সহ
সভাপতি অলোক দে জানালেন, ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ ৫০০ ও ১০০০-র নোট নিচ্ছেন, কেউ আবার একেবারেই নিচ্ছেন না। তবে কম-বেশি সকলেই দিন কাটাচ্ছেন বিভ্রান্তিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement