বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার আগে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের কাউন্সেলিং করতে বলেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সে কাজ হবে বলে জানিয়েছিলেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজের দিশা দেখানোয় ‘কেরিয়ার কাউন্সেলিং’-এ বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
যদিও এ ক্ষেত্রে বেসরকারি স্কুলগুলোর তুলনায় এখনও অনেক পিছিয়ে বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলো। অভিভাকদের দাবি, হাতে গোনা বাংলা মাধ্যম স্কুলে এমন কাউন্সেলিং হয়। শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বা কলা কোন বিষয়ে কার আগ্রহ তা জানতে কাউন্সেলিং তো হয়ই। পাশ করে পড়ুয়ারা কোন পথে যাবে, সেই দিশা দেখানোও জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘শিল্প, ব্যবসা বা অন্য ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের স্কুলে আনা হয়। তাঁদের সাফল্যের কাহিনি শুনে পড়ুয়ারাও প্রশ্ন করে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও তাদের সুলুক সন্ধান দেওয়া হয়।’’ কাউন্সেলিং-এ সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধার চিত্রও পড়ুয়াদের সামনে তুলে ধরা হয়। না হলে পরে ব্যর্থতা থেকে অবসাদ গ্রাস করতে পারে, এমনই মত ব্রততীদেবীর।
আবার মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের অধিকর্তা দেবী করের বক্তব্য, ছাত্রীরা যেন সব ক্ষেত্রে নিজেদের উপযুক্ত করে তুলতে পারে, কাউন্সেলিংয়ে সেটাই শেখানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে যে কাজের চাহিদা রয়েছে, দশ বছর পরে তার তেমন চাহিদা না-ও থাকতে পারে। সেই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে ছাত্রীরা যাতে নিজেদের উপযু্ক্ত করে, তারও পরামর্শ দেওয়া হয়।’’
মিত্র ইনস্টিটিউশন (ভবানীপুর)-এর প্রধানশিক্ষক অসিতবরণ গিরি বলেন, ‘‘লেখাপড়ার পরেই আমাদের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল চাকরির দিশা দেখানো। সরকারি চাকরির বাইরেও ভাল ভবিষ্যৎ রয়েছে, বিভিন্ন শাখার পড়ুয়াদের সেটা বোঝানো হয়।’’ তিনি জানান, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষ স্কুলে এসে কাজের সুযোগ নিয়ে আলোচনাও করেন। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পড়ুয়ার অসুবিধা হলে অভিভাবককে স্কুলে আনতে বলা হয়। এ ধরনের কাউন্সেলিং চালু করার বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।’’
শিক্ষামহলের মতে, কেরিয়ার কাউন্সেলিং নামমাত্র করে লাভ নেই। বর্তমানে সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলেও প্রতিযোগিতা বাড়ছে। তাই এমন কাউন্সেলিংয়ে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের।