রবি-ছবি: রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে অনলাইনে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল শহরের একটি স্কুল। সেখানে পড়ুয়াদের রং-পেনসিলে এ ভাবেই ধরা দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
কেউ রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশন করেছে বাড়ির ছাদে, কেউ বসার ঘরে। কেউ আবার বাগানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই করেছে আবৃত্তি। আবাসনের গ্যারাজে রঙিন কাপড় টাঙিয়ে রবীন্দ্র নাটকের কোনও অংশ অভিনয়ও করেছে কোনও পড়ুয়া। আর তার পরে সেই ভিডিয়ো পাঠিয়ে দিয়েছে স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বা ওয়েবসাইটে। করোনা আবহে রবিবার এ ভাবেই অনলাইনে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করল শহরের অধিকাংশ স্কুল।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, গত বছর করোনা আবহে ঠিক এ ভাবেই অনলাইনে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করেছিল স্কুলপড়ুয়ারা। সে বার অনেকেই ভেবেছিলেন, পরের বার হয়তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে এমন মারাত্মক আকার নেবে, তা আঁচ করতে পারেননি তাঁরা। অগত্যা পড়ুয়াদের দিয়ে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে এ বারেও অনলাইনেই ভরসা রেখেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, এ বার শুধু ওই স্কুলের ছাত্রী বা শিক্ষিকারাই নন, অনলাইনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে ফলতার একটি স্কুলও। সেই স্কুলটিকে দত্তক নিয়েছে শ্রীশিক্ষায়তন স্কুল। তাই এ বারের অনলাইন রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানে শামিল হয় ফলতার ওই স্কুলটির পড়ুয়ারাও। তাদের গাওয়া ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ’ শোনা গিয়েছে শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের ইউটিউব চ্যানেলে। এমনকি, স্কুলের অশিক্ষক এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাও অনলাইনে আবৃত্তি করেছেন। ব্রততীদেবী বলেন, “অনলাইনে সকলকে নিয়েই এ বার রবীন্দ্রজয়ন্তী করেছি। অনলাইনে একটা সুবিধা হল, সকলকে খুব সহজেই একসঙ্গে আনা যায়।”
তবে এ বছর নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে অনলাইনে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করেছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রীরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, “এ বার স্কুলের রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠান অনলাইনে হয়েছে ছোট করে। কারণ কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা রচনার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সৃষ্টি নিয়ে শীঘ্রই বড় করে অনলাইনে অনুষ্ঠান করার কথা। তার প্রস্তুতিও চলছে। তাই এ বার রবীন্দ্রজয়ন্তীতে পড়ুয়ারা নিজেরাই গান-নাচ করে নিজেদের ক্লাসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দিয়েছে।”
শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকা পাপিয়া নাগ জানাচ্ছেন, এ বারের রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করেছিলেন অশিক্ষক কর্মীরাও। তাঁর কথায়, “আগে স্কুলের রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রবীন্দ্র নাটকও মঞ্চস্থ করা হত। সেই নাটকই ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম মূল আকর্ষণ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে নাটক পরিবেশন তো সম্ভব নয়। তাই পড়ুয়ারা আবৃত্তি, গান-নাচ পরিবেশন করেছে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়াও স্কুলের ওয়েবসাইটেও এই অনুষ্ঠানের ভিডিয়ো আপলোড করা হবে।”