তিলজলা বালিকা বিদ্যালয়ের মূল দরজায় চার ছাত্রীর আঁকা মধুবনী চিত্রশৈলী। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার উপরে স্কুল। আর সেই স্কুলের মূল দরজায় রোজই কোনও না কোনও পোস্টার লাগানো চলছে। রাজনৈতিক থেকে বাণিজ্যিক পোস্টার— বাইরের লোকজন সবই সাঁটিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন ওই দরজার উপরে। যা দেখে স্কুলেরই চার ছাত্রী ঠিক করেছিল, এমনটা চলতে পারে না। তার পরেই রং-তুলি দিয়ে তারা রাঙিয়ে দিল সেই দরজা। তাদের হাতের মধুবনী চিত্রশৈলীতে এখন ঝলমল করছে তিলজলা বালিকা বিদ্যালয় এবং আশপাশের পরিবেশ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অভিনন্দা ঘোষ বৃহস্পতিবার জানালেন, আগে একাদশ শ্রেণির ওই চার ছাত্রী ক্লাসঘর, সিঁড়ির পাশেও নানা রকম ছবি এঁকেছে। সেই সব ছবিতে ওদের শিল্পনৈপুণ্যের পাশাপাশি রয়েছে প্রকৃতি এবং সমাজ সচেতনতার স্পষ্ট ছাপ। কোথাও ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা। কোথাও আবার পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহারের সচেতনতামূলক ছবি। রয়েছে জল সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বিষয়ে ছবিও।
গত বছর এই কাজ করেছে পম্পা রায়, শাহিনা ইসলাম, পূজা সরেন ও দিয়া হালদার নামে একাদশ শ্রেণির চার ছাত্রী। পম্পা পড়ে বাণিজ্য বিভাগে। অন্য তিন জন কলা বিভাগে। চার জনই আগে থেকে আঁকার তালিম নিয়েছে। পম্পা বলল, ‘‘করোনার সময়ে আমরা অনেক দিন বাড়িতে ছিলাম। পরে স্কুলে ফিরে দেখলাম, ক্লাসঘর, সিঁড়িতে বড্ড দাগ। কেউ কেউ নিজের নাম লিখে রেখেছে। এ তো আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি। বড়দিকে ওই সব জায়গায় ছবি এঁকে দিতে চাই জানানোয় উনি সম্মতি দিলেন।’’ এ বার পম্পাদের চোখ পড়েছিল পোস্টার-লাঞ্ছিত মূল দরজার উপরে। রং, তুলির ব্যবস্থা করে দেন প্রধান শিক্ষিকাই। সদ্য সেই আঁকার কাজ শেষ হয়েছে। পম্পা বলে, ‘‘এমন সুন্দর গেট দেখে হয়তো আর কারও পোস্টার লাগাতে ইচ্ছে করবে না।’’