প্রিয়াঙ্কা ভঞ্জচৌধুরী
স্কুলের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে শিরদাঁড়ায় গুরুতর চোট পেল এক ছাত্রী। অভিযোগ, ভারী ব্যাগ নিয়ে নীচে নামার সময়েই ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই হাসপাতালে শিরদাঁড়ায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কা ভঞ্জচৌধুরী নামের ওই কিশোরীর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মেয়েটির অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বিপদ কাটেনি।
বেলুড়ের রাজেন শেঠ লেনের বাসিন্দা ওই কিশোরী লিলুয়ার অগ্রসেন বালিকা শিক্ষা সদনের ছাত্রী। তার মা সুজাতাদেবী জানান, সোমবার সকালে তিনি খবর পান, মেয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। এর পরে পরিচিত কয়েক জনের সঙ্গে তিনি স্কুলে গিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে প্রথমে পার্ক স্ট্রিটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুর রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে।
ভারী ব্যাগ পিঠে নিয়ে নামতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলে এ দিন সকালে স্কুলের সহ অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেন দশম শ্রেণির কিছু পড়ুয়ার অভিভাবকেরা। ওই ছাত্রীর চিকিৎসার ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করারও আবেদন জানান তাঁরা। তাঁদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, কোনও অভিযোগ ও আবেদন থাকলে তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে। যদিও এ দিন লিখিত ভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে কিছু জানাননি জখম ছাত্রীর পরিজন বা অন্য অভিভাবকেরা। এ দিন সুজাতাদেবী বলেন, ‘‘হাসপাতালে রয়েছি। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দরকার। সকলের কাছেই সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করি, স্কুলও কিছু করবে।’’ তিনিও জানান, ভারী ব্যাগ নিয়েই মেয়েকে স্কুলে যেতে হয়।
অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, লিলুয়ার ওই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এত বই রুটিনে রয়েছে যে, তাতে ব্যাগের ওজন অনেক বেশি হয়ে যায়। এক অভিভাবকের দাবি, ‘‘দশম শ্রেণির মেয়েদের প্রায় ১৪-১৫ কেজি ওজনের ব্যাগ বইতে হয়। মনে হচ্ছে, ওই ভারের কারণেই সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ে টাল সামলাতে না পেরে মেয়েটি পড়ে গিয়েছে।’’
২০০৬ সালের কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী, কোনও পড়ুয়ার স্কুলব্যাগের ওজন তার শারীরিক ওজনের ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। কেন্দ্র গত বছর স্কুলব্যাগ সংক্রান্ত স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে, দশম শ্রেণির বইয়ের ব্যাগের ভার পাঁচ কেজির বেশি হবে না। এই নির্দেশ দিল্লি-সহ বেশ কিছু রাজ্য ইতিমধ্যেই কার্যকর করেছে।
তা হলে লিলুয়ার ওই স্কুলে কী করে এত ভারী ব্যাগ নিয়ে আসে পড়ুয়ারা? স্কুলের অধ্যক্ষ এস কে শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘আমরা অতিরিক্ত ভার চাপাই না। আর ভারী ব্যাগের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে কি না, তা-ও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’