এ পথেই যাতায়াত। ছবি: শৌভিক দে।
একই পুর এলাকায় দুই ছবি। সল্টলেকে যখন রাস্তা ম্যাস্টিক অ্যাসফল্টে মোড়া হচ্ছে তখন সংযুক্ত এলাকার রাস্তার ভগ্নদশা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার পুরসভাকে জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না। কাউন্সিলরদের একাংশেরও একই অভিযোগ। কিন্তু বিধাননগর পুরসভার দাবি, রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে কাজ হচ্ছে। সংযুক্ত এলাকাতেও দ্রুত রাস্তা মেরামত করা হবে।
শুধুমাত্র সংযুক্ত এলাকাই নয়, সল্টলেকের একাধিক জায়গায় রাস্তার ভগ্নদশা। তাই নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন রাস্তা মেরামতির আশ্বাস দিয়েছিল। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় কাজও শুরু হয়েছে। গতি মন্থর হওয়ায় কাজ এখনও শেষ হয়নি।
বাসিন্দাদের অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, তা সল্টলেক পুর এলাকা ঘুরেই দেখা গেল। সল্টলেকের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজারহাট বক্সব্রিজ থেকে পোলেনাইটের রাস্তার একেবারে ভাঙাচোরা দশা। এর মধ্যে ভয়াবহ অবস্থা তরুণ সঙ্ঘ ক্লাব থেকে চরকতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশের। রাস্তা কোথাও পুরো ভেঙে গিয়েছে। কোথাও বসে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই মণ্ডল বলেন, “এই রাস্তায় গাড়ি চলা দূর অস্ত্, হাঁটাচলাই দায়।” স্রেফ ওই অংশই নয়। প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার দশা এমনই। অথচ সেটাই ওই ওয়ার্ডের অন্যতম মূল রাস্তা।
পাশাপাশি রাজারহাট বক্সব্রিজের অপর প্রান্তে নয়াপট্টিতেও রাস্তার দশা তথৈবচ।
মহিষবাথান থেকে পোলেনাইটের মতো একই অবস্থা ১৭ থেকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মতো সংযুক্ত এলাকাতেও। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যেই প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার এই অবস্থা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। এই রাস্তায় যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। আলো কমে গেলে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে ওই সব রাস্তা। বাসিন্দাদের অভিযোগ সমর্থন করে খোদ স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের সুবল রং বলেন, “একাধিক বার পুরপ্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এমনকী লিখিত দেওয়া হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। কিছু দিন আগে পুরকর্তারা পুজোর পরে রাস্তার মেরামত শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন।”
সংযুক্ত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সল্টলেকে রাস্তা খারাপ হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বার বার মেরামত করা হয়। অথচ সংযুক্ত এলাকার ক্ষেত্রে নজর দেওয়া হয় না। শুধুমাত্র সংযুক্ত এলাকাই নয়। সল্টলেকে এফ সি ব্লক থেকে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের রাস্তা-সহ একাধিক জায়গার বেহাল অবস্থা। ওই স্কুলের অভিভাবকদের এক অংশের অভিযোগ, ওই পথে স্কুলে যাতায়াত বিপজ্জনক। সামান্য অসাবধানতায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অভিযোগ মানতে নারাজ সল্টলেকের পুরকর্তারা। চেয়ারম্যান পারিষদ (পূর্ত) অনুপম দত্ত বলেন, “পুজোর আগেই রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু রাস্তার কাজ শেষ। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি খারাপ রাস্তাই মেরামত করা হবে।” সংযুক্ত এলাকার রাস্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সল্টলেক থেকে আলাদা করে দেখার প্রশ্নই ওঠে না। সংযুক্ত এলাকার রাস্তা মেরামতির জন্য ইতিমধ্যেই দু’কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দ্রুত সেই কাজের প্রক্রিয়াও শুরু হচ্ছে।”