বিপত্তি: ফাটলের (ইনসেটে) জেরে বন্ধ করে দেওয়া হল সম্প্রীতি উড়ালপুল। বুধবার সেই কথা ঘোষণা করছেন এক পুলিশকর্মী । ছবি: অরুণ লোধ
গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরে এক বছরও কাটেনি। তার আগেই ফাটল দেখা দেওয়ায় মহেশতলার ‘সম্প্রীতি’ উড়ালপুলে সাময়িক ভাবে যান চলাচল বন্ধ করে দিল ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ। বুধবার সকালে ওই উড়ালপুলের ১২১ ও ১২২ নম্বর স্তম্ভের উপরে গার্ডারের এক্সপ্যানশন জয়েন্টে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে মহেশতলা থানায় জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, ওই ফাটল স্তম্ভের নীচ পর্যন্ত চলে এসেছে। এর পরেই জেলা পুলিশের তরফে কেএমডিএ-র বাস্তুকারদের খবর দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বেলা ১১টা থেকে ওই উড়ালপুলে বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল।
খবর পেয়ে কেএমডিএ-র আধিকারিক এবং বাস্তুকারেরা উড়ালপুল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক পরীক্ষার পরে তাঁরা জানিয়েছেন, ওই জায়গায় ঠিক ফাটল দেখা দেয়নি। বর্ষার পরে গার্ডারের উপরে থাকা সিমেন্টের স্তর দু’টি জংশন পয়েন্টের উপর থেকে সরে গিয়েছে। এমন অবস্থায় উড়ালপুল বিপজ্জনক হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেমডিএ-র তরফে লিখিত অনুমতি পাওয়ার পরেই উড়ালপুলে আবার যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।’’
গত বছরের ১১ জানুয়ারি জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটানগর পর্যন্ত চালু হয় ৭.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘সম্প্রীতি’ উড়ালপুল। এর মধ্যেই তাতে কী ভাবে ফাটল ধরল, তার সদুত্তর দিতে পারেননি কেএমডিএ-র বাস্তুকারেরা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই উড়ালপুল দিয়ে নিয়মিত ১০ চাকার ট্রেলার চলে। দিন-রাত আওয়াজ হয়। পুলিশ ও মহেশতলা পুরসভাকে একাধিক বার বিষয়টি জানানো হলেও তারা কানে তোলেনি।
মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস বলেন, ‘‘কেএমডিএ-র অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতেই ওই উড়ালপুলে যান চলাচলের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারা যা সিদ্ধান্ত জানাবে, সেই মতো নির্দেশ জারি করা হবে।’’ কেএমডিএ-র এক কর্তা জানান, এ দিন ঠিকাদার সংস্থার বাস্তুকারেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁরা একটি রিপোর্ট তৈরি করছেন। ওই রিপোর্ট কেএমডিএ-র উচ্চপদস্থ কর্তারা বিশ্লেষণ করার পরেই উড়ালপুলে যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। রিপোর্টের প্রতিলিপি পাঠানো হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক এবং ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও।
কেএমডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই ওই উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তখন ঠিকাদার সংস্থার বাস্তুকারেরাও থাকবেন।’’ আপাতত উড়ালপুলের নীচে বজবজ ট্রাঙ্ক রোড দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।