ফাইল চিত্র।
জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে খরচ সামাল দেওয়া মুশকিল। সেই কারণে পুলিশ-কুকুরদের ‘বেতন’ বাড়াতে চায় লালবাজার। এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন পুলিশের কর্তারা। খুব শীঘ্রই এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে লালবাজারের তরফে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কুকুরদের মাথাপিছু প্রায় ৮০০ টাকা বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হবে। পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক মাসে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই টাকার এই অঙ্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর এক-একটি সদস্যের জন্য বরাদ্দ মাসে ৬৭৫০ টাকা। এই বেতন শেষ বার বেড়েছিল তিন বছর আগে। কিন্তু সেই সময়ের তুলনায় এখন বিভিন্ন জিনিসের দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেই খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাহিনীর সদস্যদের যাতে ঠিক মতো পরিচর্যা করা যায়, তা নিশ্চিত করতেই বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে ভাবা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশকর্তাদের আশা, তাঁরা ওই প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠালে তাড়াতাড়িই তা মঞ্জুর হয়ে যাবে।
এক মাস আগেই চণ্ডীগড়ে প্রশিক্ষণ শেষ করে কলকাতায় এসেছে লালবাজারের সারমেয় বাহিনীর নতুন নয় সদস্য। ডগ স্কোয়াডে সদস্য-সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৫। বাহিনীর আর একটি সদস্য এখন চণ্ডীগড়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ন’মাসের প্রশিক্ষণ শেষে আগামী মাসে কলকাতায় এসে সারমেয় বাহিনীতে যোগ দেবে সে।
লালবাজার সূত্রের খবর, পুলিশ-কুকুরদের দিনে বেশ কয়েক দফায় খাবার দেওয়া হয়। সকালে তাদের দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের শুকনো খাবার। তার পরে তারা খায় বিস্কুট ও ডিম। দুপুরের দিকে ওই কুকুরদের জন্য বরাদ্দ থাকে দই। আবার বিকেল পাঁচটার সময়ে তাদের দেওয়া হয় ভারী কোনও খাবার। দরপত্রের মাধ্যমে নিযুক্ত একটি বেসরকারি সংস্থা ওই খাবার সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে। অত্যধিক গরমের কারণে গত মাস থেকে সারমেয় বাহিনীর খাদ্য-তালিকা একটু বদলানো হয়েছে। তবে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলেই আগের তালিকা অনুযায়ী খাবার দেওয়া হবে বলে বাহিনী সূত্রের খবর।
পুলিশ সূত্রের খবর, সারমেয় বাহিনীর সদস্য চার্লস বা লিজ়ার মতো কুকুরদের প্রতিদিন ৪০০ গ্রাম করে মাংস খাওয়ানো হয়। তিন বছর আগে তাদের খাওয়াতে যে টাকা খরচ হত, বর্তমানে তা অনেকটাই বেড়েছে। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের বেতন বৃদ্ধি করা ছাড়া উপায় নেই।
লালবাজার সূত্রের খবর, সারমেয় বাহিনীর সদস্যদের যাতে একই ছাদের তলায় সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যায়, তার জন্য নবান্নে প্রস্তাবিত ডগ স্কোয়াডে অত্যাধুনিক একটি চিকিৎসা কেন্দ্রও চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পিটিএস-এ যে চিকিৎসা কেন্দ্রটি রয়েছে, সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা মেলে না। ফলে অসুস্থ কুকুরদের অনেক সময়েই বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যেতে হয়। সেই কারণেই অত্যাধুনিক ওই চিকিৎসা কেন্দ্র গড়তে চাইছেন বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কর্তারা।