দ্রুত: গঙ্গায় মূর্তি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাঠামো তুলে ফেলা হচ্ছে ক্রেন দিয়ে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, বাবুঘাটে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
জলে প্রতিমা ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই তা ক্রেন দিয়ে তুলে ঘাটের এক পাশে রাখা হচ্ছে। এমনকি কোনও কাঠামো বা পুজোর ফুলও জলে ভেসে যেতে দেখা গেলে তুলে নেওয়া হচ্ছে। পুজোয় ব্যবহৃত সামগ্রী বা ফুল-পাতা ফেলার জন্য ঘাটের পাশেই আলাদা জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেখান থেকেই সেগুলি পরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের কর্মীরা। মঙ্গলবার, বিসর্জনের দ্বিতীয় দিনেও বাজেকদমতলা ঘাট থেকে পাশের জাজেস ঘাট অথবা গ্বালিয়র ঘাট থেকে শুরু করে উত্তরের নিমতলা এবং বাগবাজার ঘাটের চিত্র ছিল প্রায় একই রকম।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম সোমবার বিসর্জন শুরু হওয়ার আগেই ঘাট পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, পরিবেশ দফতরের নিয়মকানুন মেনেই অন্যান্য বারের মতো এ বারও প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
করোনা আবহে বিসর্জনের সময়ে ঘাটে ভিড় এড়াতে শুধু যে লোকসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে তা-ই নয়, সেই সঙ্গে পরিবেশ-বিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জনেও নজরদারি আরও কড়া করা হয়েছে। মঙ্গলবারও সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন ঘাটে বিসর্জন হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন চলবে বলে প্রশাসনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল।
পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা উদ্যান দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, “করোনা আবহে ঘাটে লোকসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। বিসর্জনের জন্য ঘাট পরিষ্কার রাখার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি, গঙ্গায় ভেসে আসা প্রতিমার কোনও কাঠামো চোখে পড়লেও তা তুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, সোমবার থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত শহরে প্রায় ২০০০টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। আপাতত ১৬টি ঘাট ছাড়াও শহরতলির বেশ কিছু জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। অন্তত ১০টি ক্রেন এবং ৫০০ জন পুরকর্মী ছাড়াও ঘাটে রাখা থাকছে পে-লোডার এবং বর্জ্য অপসারণ দফতরের গাড়ি। সোম ও মঙ্গলবার মিলিয়ে দু’দিনে প্রায় দু’হাজার মেট্রিক টন পুজোর সামগ্রী বিভিন্ন ঘাট থেকে তোলা হয়েছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। পুর আধিকারিকদের দাবি, করোনা আবহে এ বার বিসর্জনের শোভাযাত্রা হয়নি। সেই সঙ্গে ঘাটে ঘাটে ভিড়ও কম। অন্য বারের তুলনায় প্রতিমার সংখ্যাও অনেকটা কম। ফলে দ্রুত বিসর্জন সম্ভব হচ্ছে। কোনও কারণে বেশি রাতে বিসর্জনের পরে পুজোর সামগ্রী সরানো না হলে পরদিন সকালেই যাতে তা পরিষ্কার করা হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।