শ্রমিক পরিবারগুলিকে দেওয়া হয়েছে এমন আলু। নিজস্ব চিত্র
আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক-পরিবারগুলিকে চাল, ডাল, ময়দার সঙ্গে আলুও দিয়েছিল নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, বাড়ি ফিরে সেই প্যাকেট খুলে পরিবারের সদস্যেরা দেখলেন, পাঁচ কিলোগ্রাম আলুর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কেজি আলুই পচা! বিষয়টি বারুইপুরের পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খানের নজরে আনলে তিনি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
করোনার জেরে গত ২৩ মার্চ থেকে রাজ্যে লকডাউন শুরু হয়েছে। তার কয়েক দিন পরেই কাজের খোঁজে এসে ভাগলপুরের পাঁচটি শ্রমিক পরিবার রানিয়ায় আটকে পড়ে। ওই পরিবারগুলিতে মোট আটটি শিশু রয়েছে। কিন্তু লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফুরিয়ে গিয়েছিল শ্রমিকদের সব টাকা। চার দিন মুড়ি খেয়ে থাকার পরে আর খিদের জ্বালা সহ্য করতে পারেননি তাঁরা। বাধ্য হয়ে তাঁদের এক জন রাহুল শর্মা টুইট করে বিহারের এক রাজনৈতিক নেতাকে বিষয়টি জানান। ওই নেতা তা জানান কলকাতা পুলিশের পূর্ব ডিভিশনকে। সেখান থেকে বিষয়টি পৌঁছয় বারুইপুর পুলিশে। এর পরেই নরেন্দ্রপুর থানা ওই শ্রমিকদের জন্য প্রথম ধাপে চাল, ডাল, আলু পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। পরে বারুইপুর মহিলা থানার তরফে শিশুদের জন্য বিস্কুট এবং গুঁড়ো দুধের ব্যবস্থা করা হয়। রাহুল জানান, প্রথম বারেই থানার তরফে ফোন নম্বর দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছিল খাবার শেষ হয়ে গেলে জানাতে।
রাহুল জানিয়েছেন, সেই মতো শুক্রবার ফোন করলে তাঁদের থানায় যেতে বলা হয়। সাইকেল জোগাড় করে পাঁচটি পরিবারের পাঁচ সদস্য থানায় যান। সেখানে প্রত্যেক পরিবারের জন্য দেওয়া হয় তিন কেজি চাল, এক কেজি ময়দা, দু’কেজি ডাল এবং এক কেজি আলু। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখা যায়, পাঁচ কেজি আলুর বেশির ভাগই পচা! রাহুলের কথায়, ‘‘পচা আলুর গন্ধে টেকা যাচ্ছিল না বলে ফেলে দিতে হল। তেলও দেয়নি। বাচ্চাগুলোকে তো এখন না-খেয়ে থাকতে হবে।’’
আরও পড়ুন: আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যু
থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কর্মীদের দিয়ে বাকি প্যাকেটের আলু পরীক্ষা করিয়ে দেখা গিয়েছে, সেগুলির কোনওটিই পচা নয়। ওঁরা যে এই থানা থেকে ওই আলু নিয়ে গিয়েছেন, সেটা তো আগে প্রমাণ হওয়া দরকার।’’
আরও পড়ুন: যাদবপুরের রান্নাঘরে রেঁধে শ্রম দিতে চান চা-দোকানি