এবড়োখেবড়ো: পিচ উঠে গিয়ে বেহাল দশা সম্প্রীতি উড়ালপুলের। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
বয়স এখনও এক বছর পার হয়নি। এরই মধ্যে জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটানগর যাওয়ার রাজ্যের দীর্ঘতম উড়ালপুলের রাস্তার বেহাল অবস্থা চোখে পড়ার মতো। প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ‘সম্প্রীতি’ উড়ালপুলের রাস্তার দুর্গতির কথা স্বীকার করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘মাত্র আট মাসেই সম্প্রীতি উড়ালপুলের উপরের রাস্তা কেন এত খারাপ হল, তা জানতে সমীক্ষা করা হচ্ছে। কাজে গাফিলতি থাকলে নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘গোটা উড়ালপুলের রাস্তার সংস্কারের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। উন্নত মানের বিটুমিন দিয়ে উড়ালপুলের রাস্তা নির্মাণ করা হবে।’’
মহেশতলা, বাটানগর, বজবজ, পুজালি প্রভৃতি এলাকার মানুষের কাছে এই উড়ালপুলের গুরুত্ব অপরিসীম। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটানগর পর্যন্ত সম্প্রীতি উড়ালপুলের উদ্বোধন হয়। মূল কলকাতার সঙ্গে বাটানগর ও বজবজকে যুক্তকারী বজবজ ট্রাঙ্ক রোড প্রয়োজনের তুলনায় সঙ্কীর্ণ হওয়ায়, ওই রাস্তায় নিত্যদিন যানজট লেগে থাকত। ওই সমস্যা সমাধানে বাটানগর উড়ালপুল নির্মাণের কথা ভাবা হয়। ২০১৪ সালে ওই উড়ালপুলের কাজ শুরু হয়। এই উড়ালপুল নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় তিনশো কোটি টাকা।
কিন্তু উড়ালপুলের বয়স ছ’মাস পার হতেই একাধিক জায়গায় পিচ উঠে গিয়েছে। রবিবার সম্প্রীতি উড়ালপুলে উঠে দেখা গেল, পিচ ভেঙে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উড়ালপুলের উপরে এমনিতেই গাড়ি, মোটরবাইকের গতিবেগ তুলনায় বেশি থাকে। সম্প্রীতি উড়ালপুলের উপরের রাস্তার খানাখন্দে বৃষ্টিতে জল জমে থাকে। তার জেরে বারবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাটানগরের বাসিন্দা মহম্মদ শাহিদের অভিযোগ, ‘‘শীঘ্রই উড়ালপুলের রাস্তা সংস্কার না করলে আরও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসনের কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, উড়ালপুলের রাস্তা দ্রুততার সঙ্গে ভাল ভাবে সংস্কার করা হোক।’’
২০১৪ সালে পিপিপি মডেলে ওই উড়ালপুলের কাজ শুরু হয়। উড়ালপুল নির্মাণের দায়িত্বে ছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। কেএমডিএ-র এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘বৃষ্টি না থামলে বিটুমিন দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। বর্ষা চলে গেলেই আমরা সম্প্রীতি উড়ালপুলের কাজ শুরু করব। এ বিষয়ে যাবতীয় দরপত্রের অনুমোদন হয়ে গিয়েছে।’’ মহেশতলার বিধায়ক তথা মহেশতলা পুরসভার পুরপ্রধান দুলাল দাস বলেন, ‘‘এই উড়ালপুল ব্যবহার করে অনেক কম সময়ে কলকাতা থেকে বজবজ, বাটা, পুজালি, মহেশতলা, সাতগাছিয়া, বিষ্ণপুরে পৌঁছনো যায়। কিন্তু উড়ালপুলের রাস্তা খারাপ থাকায় সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসন শীঘ্রই কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে।’’