সমস্যাটি স্কুলের অভ্যন্তরীণ এবং তাঁদের ঝামেলাও শুধুই স্কুল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিন্তু তার জেরে রাস্তা আটকে, সাধারণ মানুষকে নাস্তানাবুদ করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নজির গড়লেন শহরের এক দল অভিভাবক। বুধবার এই ঘটনার সাক্ষী রইল দক্ষিণ কলকাতার সেই গড়িয়াহাট এলাকা, পুজোর বাজারের জন্য যেখানে প্রায় প্রতি দিনই যানজটের কবলে জর্জরিত হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। এ দিনও যানজটে থমকে যায় রাসবিহারী থেকে গড়িয়াহাট মোড় পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা।
অভিভাবক ও স্কুল সূত্রের খবর, হিন্দুস্থান রোডের লিসে স্কুলটি আইসিএসই বোর্ডের অধীনে ছিল। স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা কিছু আর্থিক অনিয়মের অভিযোগকে ঘিরে সম্প্রতি ওই বোর্ড তাদের অনুমোদন বাতিল করেছে। অভিভাবকদের বক্তব্য, স্কুল-কর্তৃপক্ষ এখন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে যেতে চান। কিন্তু তাঁরা সেই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধী। সেই কারণেই তাঁরা এ দিন দুপুর আড়াইটে থেকে সওয়া তিনটে পর্যন্ত অবরোধ করেন।
এ দিন স্কুলে অধ্যক্ষার ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানান, অনুমোদন বাতিল হওয়ার পরেই তাঁরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও পর্ষদের জবাব মেলেনি। আইসিএসই বোর্ডের সিইও জি অ্যারাথন জানান, ১৯৯৯ সাল থেকে এই সমস্যা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘এই স্কুলের সমস্যা অনেক। ২০১২ সালে অভিভাবক এবং প্রাক্তন শিক্ষকেরা আমাদের চিঠি লিখে অভিযোগ জানান। ২০১৬-তেও সমস্যা মেটেনি। আমাদের করণীয় কিছু নেই।’’ অনুমোদন বাতিলের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকেও বিষয়টি জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছে বোর্ড।
স্কুলের অধ্যক্ষা শর্মিলা মিত্র বলেন, ‘‘আইসিএসই বোর্ডের যা দাবি ছিল, তা আমরা মিটিয়ে দিয়েছি। বিষয়টা ভেবে দেখতে বলার পরেও কেন তাঁরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, ভেবে পাচ্ছি না।’’ এক অভিভাবক বলেন, ‘‘আমাদের সন্তানরা তো কার্যত জলে পড়ে গেল। এক বোর্ড ভেবে ভর্তি করানো হল। এখন বোর্ডে পরিবর্তন হলে তা মেনে নেব না।’’ কিন্তু রাস্তা আটকে হাজার হাজার মানুষকে সমস্যায় ফেললেন কেন? অভিভাবকদের জবাব, এটা না করলে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেত না।