বেলাগাম ভিড়। ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজো শেষ হতেই করোনার প্রকোপ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে দমদম ও দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। তবে উত্তর দমদমে এখনও তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকায় পুজোর আগে প্রতিদিন গড়ে দু’-তিন জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু পুজোর পরেই দিনে চার-পাঁচ জন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। এই সংখ্যাটা আগামী কয়েক দিনে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুরকর্তারা। উৎসবের মরসুম চলায় এখনও খুব বেশি লোক করোনা পরীক্ষা করাতে আসছেন না বলে খবর।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসকের অবশ্য দাবি, আক্রান্তের সংখ্যা খুব সামান্যই বেড়েছে। তাই এখনই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। পুর কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছেন। প্রতিষেধক দেওয়ার কাজও চালু রয়েছে। প্রথম ডোজ়ের পর্ব প্রায় শেষ। তবে বার বার আবেদন জানানো সত্ত্বেও বাসিন্দাদের একটি অংশ কিছুতেই প্রতিষেধক নিতে চাইছেন না বলে অভিযোগ পুরসভার। মুখ্য প্রশাসক জানান, অনিচ্ছুক ওই বাসিন্দাদের কাছে পুরসভা ফের প্রতিষেধক নেওয়ার আবেদন জানাবে।
দক্ষিণ দমদমের মতো দমদম পুর এলাকাতেও বাড়ছে সংক্রমণ। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বরুণ নট্ট জানান, সেখানে করোনা রোগীর সংখ্যা খুব সামান্য হলেও বেড়েছে। তবে বর্তমানে খুব কম সংখ্যক মানুষই করোনা পরীক্ষা করাতে আসছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, পুজোর আগে দিনে দু’-তিন জন করে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। সেই সংখ্যাটা বেড়েছে।
উত্তর দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক বিধান বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর এলাকায় করোনার প্রকোপ বেড়েছে বলে কোনও খবর এখনও পর্যন্ত নেই। পুরসভা সূত্রের খবর, সেখানেও খুব কম সংখ্যক মানুষ পরীক্ষা করাতে আসছেন।
তিনটি পুরসভারই কর্তাদের মতে, পুজোর সময়ে যে বেলাগাম ভিড় শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় দেখা গিয়েছে, তার পরে সংক্রমণ বৃদ্ধি এক রকম অবশ্যম্ভাবীই ছিল। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য কে দায়ী, তা নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি এখন তাই বৃথা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর সময়ে ভিড় করার পাশাপাশি মাস্ক পরা বা দূরত্ব-বিধি বজায় রাখারও তোয়াক্কা করেননি অধিকাংশ মানুষ। উৎসবের মরসুম এখনও শেষ হয়নি। তাঁরা চান, এ বার অন্তত প্রশাসন কড়া মনোভাব দেখাক। তিনটি পুরসভারই কর্তারা জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো বা দীপাবলি উপলক্ষে কোথাও যাতে ভিড় না হয়, তার জন্য পুজো কমিটিগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে। দুর্গাপুজোর সময়েও তা-ই করা হয়েছিল।
এলাকার দুর্গাপুজো কমিটিগুলির বক্তব্য, প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেকই চলা হয়েছে। লাগাতার প্রচারও চালানো হয়েছে। কিন্তু দর্শনার্থীদের একাংশ বিধি মানেননি।