—প্রতীকী চিত্র।
তাঁদের কেউ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা, কেউ প্রযুক্তিবিদ, আমলা বা এমেরিটাস অধ্যাপক। এঁদের বেশির ভাগই অবসরপ্রাপ্ত। আর অবসর জীবনে পৌঁছে তাঁরা চান, জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দিতে। তাই স্কুলশিক্ষার্থীদের ভাষা শিক্ষা দিতে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। সে জন্যই নেতাজিনগর বালিকা বিদ্যামন্দিরে সম্প্রতি শুরু হয়েছে ‘ভাষার খেলাঘর’।
এর অন্যতম উদ্যোক্তা খড়্গপুর আইআইটি-র অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক অনুপম বসু জানালেন, তাঁদের জীবনের অভিজ্ঞতা একত্রিত করেই স্কুলপড়ুয়াদের জন্য কিছু করতে চাইছেন। প্রথমে তাদের ভাষা শিক্ষার উপরে জোর দিতে চাইছেন তাঁরা। অনুপমের কথায়, ‘‘ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে শেখা মানে একেবারে গাছের গোড়ায় জল দেওয়া। ভাষা শিখলে অন্য বিষয় বোঝাও সহজ হয়ে যায়।’’ অনুপম জানালেন, এ নিয়ে এগোনোর আগে তাঁরা কিছু বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন। আপাতত তৃতীয় থেকে সপ্তম শ্রেণির বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের বাংলা ও ইংরেজি ভাষা চর্চার উপরে তাঁরা জোর দিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তাদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে মোবাইল লাইব্রেরি তৈরির দিকেও তাঁরা এগোচ্ছেন। প্রথমে নেতাজিনগর বালিকা বিদ্যালয়ে, ও পরে বিজয়গড় বালিকা বিদ্যালয়ে এই ভাষা শিক্ষার পাঠ শুরু করবেন তাঁরা। পরে তা অন্যত্র ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও আছে। তবে স্কুলের পাঠ্যসূচির বাইরেও অনেক কিছু পড়ানো হবে, যা বাস্তবে চলার পথে বাংলা মাধ্যমের ওই পড়ুয়াদের অনেকাংশে সাহায্য করবে।
অনুপম জানালেন, সার্বিক এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিক্ষা সমন্বয়’। এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করতে তাঁরা সাহায্য পেয়েছেন কলকাতার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্নার। এই উদ্যোগে শামিল হয়েছেন সোনারপুরের কামরাবাদ গার্লস হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অলকানন্দা ঘোষ সেনগুপ্তও। তিনি জানালেন, নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, বর্তমানে পড়ুয়াদের ভাষা নিয়ে চর্চা যথাযথ ভাবে হয় না। তাঁর কথায়, ‘‘শুধুই ভাষার চর্চা নয়। এর সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা নিয়ে সচেতনতা, মূল্যবোধের শিক্ষা— সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে এরও প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের ইচ্ছে, ভবিষ্যতে এই বিষয়গুলির দিকেও নজর দেওয়া।’’