প্রতীকী ছবি।
বছরের গোড়া থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হয়েছে। পতঙ্গবিদ নিয়োগের পাশাপাশি সাফাইয়ের কাজেও দেওয়া হচ্ছে বিশেষ গুরুত্ব। কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তার উপরেও চলছে নজরদারি। এমনই দাবি বিধাননগর পুরসভার কর্তাদের।
কিন্তু পারদ খানিক ঊর্ধ্বমুখী হতেই নিউ টাউনে ত্রাস হয়ে উঠেছে মশার দৌরাত্ম্য। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, রাতে তো বটেই, দিনের বেলাতেও ঘরের জানলা-দরজা খোলা দায় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা এনকেডিএ-র কাছে মশার উপদ্রব নিয়ে পদক্ষেপ করতে আবেদন করেছে নিউ টাউনের বাসিন্দাদের সংগঠন ‘নিউ টাউন রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরাম’। দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যদিও তাতে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না বাসিন্দারা।
অভিযোগ, নিউ টাউনের ‘অ্যাকশন এরিয়া ১’-এর আবাসিক এলাকায় পার্থেনিয়ামের ঝোপ বেড়ে চলেছে। অথচ, তা সাফ করার ক্ষেত্রে কোনও তৎপরতা নেই প্রশাসনের। রাস্তায় দাঁড়ানো যাচ্ছে না। দিন হোক বা রাত, ফ্ল্যাটের দরজা-জানলা খোলা রাখাই মুশকিল হচ্ছে। বাসিন্দাদের ওই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সমীর গুপ্ত ও লুতফুল আলম জানান, বেশ কিছু দিন ধরে মশার উপদ্রব প্রবল মাত্রায় বেড়েছে। নিউ টাউনের বিভিন্ন জায়গা থেকেই বাসিন্দারা এমন অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁদের কাছে।
শুধু বাসিন্দারাই নন, কর্মসূত্রে নিউ টাউনে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করা বহু মানুষ একই সমস্যায় পড়েছেন। মধ্যমগ্রাম থেকে ‘অ্যাকশন এরিয়া ১’-এর একটি সংস্থায় কাজ করতে আসেন খোকন বসু। তিনি জানান, বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় বাসের জন্য অপেক্ষা করাটাও মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এত মশা যে, দাঁড়ানো যাচ্ছে না!
প্রশ্ন উঠেছে, নিউ টাউনে এত মশা হচ্ছে কেন?
বাসিন্দাদের একাংশের অনুমান, খালগুলিতে জলের প্রবাহ ঠিক নেই বলেই মশা বাড়ছে। ঝোপজঙ্গল বাড়লেও বহু জায়গায় তা নিয়মিত সাফাই হচ্ছে না। পাশাপাশি যে সব জায়গায় নির্মাণকাজ হচ্ছে, সেখানেও নজরদারি চালানো প্রয়োজন। কারণ, অনেক সময়েই নির্মীয়মাণ বিভিন্ন বাড়িতে জল জমিয়ে রাখা হয়।
নজরদারি না-থাকা বা নিয়মিত তৎপরতার অভাবের অভিযোগ অস্বীকার করে এনকেডিএ-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, সল্টলেক ও নিউ টাউনে মশার দাপট বেড়েছে ঠিকই। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব রকমের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ‘মসকুইটো ম্যাগনেট’ বসানো হয়েছে। খালগুলিতে নৌকা নামিয়ে মশা মারার তেল স্প্রে করা থেকে শুরু করে নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। এ বার খালে জলের প্রবাহ বাড়াতে সেচ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।