অর্থসঙ্কটে গবেষণা কেন্দ্র। — ফাইল চিত্র।
অর্থকষ্টের মুখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কালচারাল টেক্সটস অ্যান্ড রেকর্ডস। স্কুলের বিভিন্ন প্রকল্প চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রাক্তনী-সহ অন্যদের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এমনকি, কর্পোরেট সাহায্যের আবেদনও জানানো হয়েছে।
বেশ কিছু দিন ধরেই দেশের অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয় অর্থসঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আর্থিক সাহায্যের জন্য প্রাক্তনীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন উপাচার্য। রাজ্য সরকারকেও এই সঙ্কটের কথা জানানো হয়। রাজ্যের তরফে ছ’কোটি টাকা সাহায্য ইতিমধ্যে এসেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে বক্তব্য, এখন যে ধরনের আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন এই বিশ্ববিদ্যালয়, তাতে ওই টাকা যথেষ্ট নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য কার্যত শূন্যে এসে ঠেকেছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্কুল অব কালচারাল টেক্সটস অ্যান্ড রেকর্ডস-এর আর্থিক সঙ্কটের কথা সামনে এল। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা-অধিকর্তা সুকান্ত চৌধুরী এবং বর্তমান অধিকর্তা অভিজিৎ গুপ্ত সেই পরিপ্রেক্ষিতে সাহায্যের আবেদন করেছেন।
শুক্রবার অভিজিৎবাবু জানান, বর্তমান যে প্রকল্পগুলি রয়েছে এবং আগামী দিনে যে সব প্রকল্প করার পরিকল্পনা রয়েছে, সেগুলির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এখন স্কুলের হাতে নেই। তাই তাঁরা সাহায্যের আবেদন করেছেন। তিনি আরও জানান, এই স্কুলের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ স্বেচ্ছায় চালান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা। রয়েছেন কৃতী গবেষকেরা। কিন্তু তাঁরা কেউই স্থায়ী নন। সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করেন। ফলে, অনেকেই চলে যান। এতে ধারাবাহিক গবেষণা ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘গবেষকদের বেশি পারিশ্রমিক দিতে গেলে প্রয়োজন অর্থের। এই মুহূর্তে সেই টাকা স্কুলের হাতে নেই।’’ তিনি আরও জানান, বর্তমানে দু’টি বড় প্রকল্প টাকার অভাবে পুরোপুরি থমকে রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল ‘শব্দকল্প’ প্রকল্প। অন্যটি, জীবনানন্দ দাশের লেখার ৯০টি পাণ্ডুলিপির ডিজিটাইজ়েশনের কাজ। যার মধ্যে অনেক পাণ্ডুলিপি এখনও অপ্রকাশিত।
সুকান্তবাবু জানিয়েছেন, বাংলায় ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ঐতিহাসিক শব্দকোষ তৈরির প্রকল্প ‘শব্দকল্প’-এর জন্য তাঁরা প্রথমে কেন্দ্রের ‘রুসা’ প্রকল্প এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এনডাওমেন্ট তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছিলেন। কিন্তু আরও আর্থিক সহায়তার দরকার। সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘ঢাকার বাংলা অ্যাকাডেমি স্বল্প আয়তনে বাংলায় এমন শব্দকোষ তৈরি করেছে। কিন্তু আমাদের কাজটি বিপুল। ইংরেজি আর ডাচ ছাড়া অন্য ভাষায় এমন কাজ আর হয়নি।’’ আবেদনে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য বিদেশে বসবাসকারী শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে থেকে ৫০০ জন যদি ২৫০ ডলার করে দেন অথবা ২৫০ জন ৫০০ ডলার করে দেন, তা হলে ‘শব্দকল্প’ দিনের আলো দেখতে পারে।