—প্রতীকী ছবি।
চলতি বছর জুন মাস থেকে কালীঘাট মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু করেছে রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই সংস্কারের কাজ শেষ করে তা কালীঘাট মন্দির কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে পৌঁছে জানা যাচ্ছে, সংস্কারের কাজ শেষ করতে আরও কয়েক মাস অতিরিক্ত সময় লাগবে। মন্দির কমিটি সূত্রে খবর, সংস্কারের কাজ শুরু করার পর রিলায়্যান্স গোষ্ঠী জানতে পারে কালীঘাটের মূল মন্দির, গর্ভগৃহ, ভোগঘর এবং নাটমন্দির সবই কলকাতা পুরসভার গ্রেড-এ হেরিটেজের তালিকাভুক্ত। তাই ওই সব জায়গায় সংস্কারের কাজে হাত দিতে হলে আগে হেরিটেজ কমিটির অনুমতি নিতে হবে। যদিও অনুমতি পাওয়ার আগে মন্দিরের অন্যত্র সংস্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছিল রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। গত অক্টোবর মাসে কালীঘাট মন্দিরের গ্রেড-এ হেরিটেজের তালিকাভুক্ত জায়গাগুলির সংস্কারের অনুমতি পেয়েছে তারা। তার পরেই জোরকদমে শুরু হয়েছে সংস্কারের কাজ। সেই কাজ এতটাই যত্নসহকারে করা হচ্ছে যে, অল্প সময়ের মধ্যে তা শেষ করা সম্ভব নয় বলেই মন্দির কমিটির সূত্রে খবর।
তাই কালীঘাট মন্দির পুরোপুরি সংস্কার করতে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ হালদার বলেন, “এত ঐতিহ্যবাহী একটি মন্দিরকে সংস্কার করার কাজ সহজ নয়। তাও আবার মন্দির খোলা রেখে সংস্কারের কাজ করতে হচ্ছে রিলায়্যান্সকে। এছাড়াও অন্যান্য অনুমতির জন্যও সংস্কারের কাজ খানিকটা থমকে ছিল। কিন্তু যে ভাবে সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে তা দেখে আমরা মুগ্ধ। সেই সংস্কারের কাজ দেখে বলতে পারি তা সময়সাপেক্ষ বিষয়।” তিনি আরও বলেন, “সবে জুন মাস থেকে মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে এত বড় এবং ঐতিহ্যবাহী মন্দির সংস্কারের কাজ মুখের কথা নয়। ভাল ফল পেতে গেলে আমাদের সময় দিতেই হবে, সবারই ধৈর্য ধরা উচিত। সংস্কারের কাজ শেষ হলেই দর্শনার্থীরা বুঝতে পারবেন কত উন্নত মানের প্রযুক্তি দিয়ে মন্দির সংস্কার করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, কালীঘাট মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুরসভাকে। কিন্তু অভিযোগ, তারা নির্দিষ্ট সময়ে মন্দির সংস্কারের কাজ করতে পারেনি। আর গত চৈত্র সংক্রান্তিতে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই কমিটির কাছে মন্দির সংস্কারের বিষয়ে জানতে চান তিনি। মন্দির কমিটির একাংশের দাবি, সংস্কারে বিলম্ব হওয়ার কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই তিনি উদ্যোগী হয়ে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীকে মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব নিতে বলেন। ২০১৯ সালে কালীঘাট মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুরসভাকে। মন্দির কমিটি এবং পুরসভার মধ্যে কথাবার্তায় ঠিক হয়, ১৮ মাসের মধ্যে কালীঘাট মন্দির সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে। সেই মতো কাজও শুরু হয়। কিন্তু প্রায় ৪ বছর পরেও মন্দির সংস্কারের কাজ শেষ হয়নি। এ সব জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব রিলায়্যান্স গোষ্ঠীকে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। এ বছর জুন মাস থেকে সংস্কারের কাজে হাত দেয় রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। কিন্তু অনুমতি এবং নানা বিষয়ে বিলম্ব হওয়ায় মন্দির সংস্কারে কিছুটা দেরি হচ্ছে।