ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান (বাঁ দিকে) এবং মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
মন্ত্রীর প্রশ্রয়ে তিলে তিলে বেড়েছে ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের সম্পত্তির পরিমাণ। কলকাতা এবং দুবাইয়ে তাঁর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ আগেই পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। এ বার রাজ্যের কিছু জেলাতেও ১০১টি সম্পত্তির হদিশ মিলল বাকিবুরের। অন্তত তেমনই জানা যাচ্ছে ইডি সূত্রে।
মূলত উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়া জেলাতেই এই সম্পত্তির সিংহভাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা, বারাসত এবং বাদুরিয়ায় বাকিবুরের সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। নদিয়ার বিভিন্ন গ্রামেও বাকিবুর এবং তাঁর আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছি বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। ইডির গোয়েন্দাদের ধারণা, এই সম্পত্তি মন্ত্রী বালুর প্রশ্রয়েই ধীরে ধীরে বাড়িয়েছেন বাকিবুর।
মঙ্গলবারই রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার বাকিবুর রহমান এবং মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। তাতে বলা হয়েছে, মন্ত্রীর আনুকূল্যেই সরকারি তহবিলের ৪৫০ কোটি টাকা গিয়েছে বাকিবুরের কাছে। বাকিবুরের সংস্থার অডিটরকেই উদ্ধৃত করে ইডি জানিয়েছিল, বাকিবুর তাঁর সংস্থার ৫০ কর্মীর নামে ভুয়ো কৃষক হিসেবে অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে ধান কেনার নামে ৪৫০.৩১ কোটি টাকার ফান্ড রিলিজ করা হয়। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনসিয়াল কমোডিটি সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড’ ওই ফান্ড দিয়েছিল। চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, এই সংস্থার মাথায় রয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ই। কিন্তু এত অর্থ নিয়ে কী করেছিলেন বাকিবুর। ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে সেই প্রশ্নের উত্তর।
ইডি সূত্রে খবর নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনায় বাকিবুরের ওই ১০১টি সম্পত্তির মূল্য ৯ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও কলকাতায় বাকিবুরের কোটি কোটি টাকার বাড়ি, আবাসন, রেস্তরাঁ, বারের হদিশ পেয়েছে ইডি। এমনকি দুবাইয়েও বাকিবুরের সম্পত্তি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ইডির তদন্তে।
কলকাতা নগর দায়রা আদালতে বাকিবুরদের বিরুদ্ধে চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে বেআইনি ভাবে রেশনের চাল আটা খোলা বাজারে বিক্রি এবং কমদামে ভুয়ো চাষী সাজিয়ে খাদ্যশস্য কেনা-সহ বিভিন্ন উপায়ে বছরের পর বছর এই দুর্নীতি চালিয়েছেন ব্যবসায়ী বাকিবুর। আর তাতে প্রশ্রয় দিয়ে গিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। যার ফলে দু’জনেই আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন।