ঝড়ে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের উপরেই ভেঙে পড়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র
পরিকাঠামোর অভাব এবং নিয়মের জট। এই দুইয়ের কারণেই আমপান পরবর্তী সময়ে ধীর গতিতে চলছে শহরের দুই সরোবরে ভেঙে পড়া গাছ সরানোর প্রক্রিয়া।
রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরের দেখভালের দায়িত্বে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। ওই সংস্থা সূত্রের খবর, বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ে দুই সরোবরের প্রায় তিনশোটি গাছ ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রবীন্দ্র সরোবর সংলগ্ন সাদার্ন অ্যাভিনিউ এবং বরজ রোড, সুভাষ সরোবর সংলগ্ন সুরেশ সরকার রোড। এ ছাড়াও সরোবরের কোথাও কোথাও পাঁচিলও ভেঙেছে। চত্বরের ভিতরের বাতিস্তম্ভের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক গাছই ডালপালা নিয়ে পার্শ্ববর্তী রাস্তায় এসে পড়েছে। সেই গাছ সরানো নিয়েই কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী, সরোবরের গাছ রাস্তায় পড়লে তা সরানো পুরসভার দায়িত্ব। কিন্তু চত্বরে পড়ে থাকা গাছ সরাবেন তাঁরা। কলকাতা পুরসভাও মানছে সে কথা। শহর জুড়ে পড়ে থাকা গাছ সরাচ্ছে পুরসভা, তাই এই কাজে কিছুটা সময় লাগবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে তারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য মত, এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে কেএমডিএ-ও রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ সরানোর কাজে হাত লাগাতে পারত।
রাস্তা থেকে বড় গাছ সরানোর পরিকাঠামো তাদের নেই বলে হাত তুলে নিয়েছে ওই সংস্থা। তবে সরোবর চত্বরে যে সব গাছ পড়েছে, সেগুলি সরানো শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে কেএমডিএ।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘সরোবরের ভিতরের গাছ রাস্তায় পড়লে তা সরানোর দায়িত্ব পুরসভারই। এই মুহূর্তে শহর জুড়ে এই সমস্যা রয়েছে। ফলে যে জায়গায় গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সে সব সরিয়ে যান চলাচল শুরু করানোয় প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাই ওই কাজ করতে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যাবে।’’
কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবরের প্রবেশপথের মুখে রাস্তায় বেশ কয়েকটি গাছ পড়েছিল। সেগুলি না সরানো হলে সরোবরের ভিতর ঢোকা যাচ্ছিল না। তাঁর দাবি, সেগুলি কোনও মতে সরিয়ে পথ করা হয়েছে। তবে ডাল কেটে সরানোর কাজ পুরসভাই করবে। কারণ, তাঁদের এত গাছ সরানোর পরিকাঠামো নেই। চত্বরের গাছ সরাতে বহিরাগত সংস্থাকে চুক্তির ভিত্তিতে কেএমডিএ নিয়োগ করেছে। এ ছাড়াও দুই সরোবরে কেএমডিএ মোট ৪০ জন শ্রমিককে নিয়ে দু’টি দল তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই সংস্থা ভেঙে পড়া পাঁচিল মেরামতিও শুরু করেছে।