প্রতীকী ছবি।
ক্রেতা-সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে মানুষকে যাতে বহু দূরে ছুটতে না হয়, তার জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজ্যের ছ’টি জেলার মহকুমা শহরে উদ্বোধন হয়েছিল ছ’টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের। অনলাইনে সেই উদ্বোধন করেছিলেন বিভাগীয় মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। খাতায়-কলমে চালু হয়ে গেলেও অভিযোগ, অফিস চালু করার জন্য যে পরিকাঠামো দরকার, সেটাই গড়ে তোলা হয়নি। সেই কারণে ওই সমস্ত অফিসের যাবতীয় কাজ জেলা ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের অফিস থেকেই চলছে। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমেনি এতটুকুও।
অথচ, মানুষের হয়রানি কমানোর উদ্দেশ্যেই ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের ওই আঞ্চলিক অফিসগুলি চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন সাধনবাবু। মন্ত্রীর যুক্তি ছিল, প্রান্তিক এলাকার মানুষের পক্ষে ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের জেলা অফিসে আসাটা খরচ ও সময়সাপেক্ষ। সেই কারণেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এবং মালদহের চাঁচলে আলাদা আলাদা অফিস তৈরি করা হয়েছে। ওই সমস্ত অফিসেই ক্রেতা-সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। কিন্তু পরিকাঠামো গড়ে না তোলায় এলাকার বাসিন্দাদের এখনও ছুটে যেতে হচ্ছে ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের জেলা অফিসে।
হাওড়া জেলার ক্রেতা-সুরক্ষা অফিস হাওড়া শহরেরই মল্লিকফটক এলাকায়। হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার মানুষের সুবিধার্থে উলুবেড়িয়ায় নতুন একটি অফিস চালু করেছেন মন্ত্রী। সম্প্রতি মল্লিকফটকের অফিসে ফোন করা হলে জনৈক কর্মী বললেন, ‘‘উলুবেড়িয়ার অফিস এখনও চালু হয়নি। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ জানাতে হলে মল্লিকফটকেই আসতে হবে।’’ একই কথা বললেন বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা ক্রেতা-সুরক্ষা অফিসের এক কর্মী। ফোনে তিনি বললেন, ‘‘এখনও বসিরহাটের অফিস চালু হয়নি। ওই এলাকার মানুষকে বারাসতের অফিসে আসতে হবে।’’ বাকি চারটি জেলার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
বসিরহাটের মিনাখাঁ ব্লকের বাসিন্দা রমেন ঘোষ বললেন, ‘‘খবরে শুনেছিলাম, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বসিরহাটে ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের আঞ্চলিক অফিস চালু হচ্ছে। খবরের কাগজে সেই বিজ্ঞাপনও দেখেছিলাম। মন্ত্রী উদ্বোধন করার পরেও অফিস চালু না হওয়ায় অবাক লাগছে। এখনও অভিযোগ জানাতে হলে আমাদের বারাসতে ছুটতে হচ্ছে। বসিরহাটের অফিস চালু হলে আমরা খুব উপকৃত হব।’’
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের সচিব অত্রি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘১৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী প্রতিটি আঞ্চলিক অফিসের ইউনিট গড়ে তোলার কাজটা শুরু করেছিলেন। কোনও ভবনের উদ্বোধন করেননি।’’ আর মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘করোনা অতিমারির কারণে আঞ্চলিক অফিস চালু হতে একটু দেরি হচ্ছে। ওই সমস্ত অফিসের যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আঞ্চলিক অফিসগুলি চালু হয়ে যাবে।’’