পুলিশের দাবি, বিনোদ ভুয়ো কলসেন্টার খুলে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের প্রতারণা চালাচ্ছিল—ছবি: সংগৃহীত
ভুয়ো কলসেন্টার খুলে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করার অভিযোগে কলকাতার কুখ্যাত তোলাবাজ শেখ বিনোদকে গ্রেফতার করল পুলিশ। কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ শহরতলির ডেপুটি কমিশনার বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, পূর্ব পুটিয়ারির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জালিয়াতির অভিযোগ করেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে শেখ বিনোদের সরাসরি যোগ পাওয়া যায়। তার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করেছে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ।
তবে শেখ বিনোদের গ্রেফতারের পিছনে অন্য সমীকরণ রয়েছে বলে দাবি কলকাতার এই কুখ্যাত গ্যাংস্টারের শাগরেদদের। তাঁদের দাবি, এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নির্দেশেই গ্রেফতার করা হয়েছে শেখ বিনোদকে। পুলিশের দাবি, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন, পটনার বাসিন্দা কুমার আনন্দ নামে এক ব্যক্তি অনলাইন ব্যাঙ্ক প্রতারণার একটি অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁদের ব্যাঙ্কের শাখায়। ওই অভিযোগে দেখা যাচ্ছে, প্রতারণার টাকা জমা পড়েছে চমন সিংহ নামে কলকাতার এক বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে।
পুলিশের দাবি, চমন সিংহ জেরায় জানান, শেখ বিনোদের গা়ড়ির চালক হিসাবে কাজ করেন তিনি। শেখ বিনোদই তাঁকে ওই অ্যাকাউন্ট খুলতে বলেছিলেন। পুলিশের দাবি, চমন সিংহকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে জেরার জন্য আটক করা হয় শেখ বিনোদকে। তার বাড়ি তল্লাশি করে আটটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পাওয়া গিয়েছে যেগুলোয় প্রতারণার টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: রেড রোডে পুলিশ মহড়ার মাঝে ফের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কা গার্ডরেলে, পাকড়াও ছাত্র
কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ শহরতলির এক আধিকারিক দাবি করেন, শেখ বিনোদ যাদবপুর এবং টালিগঞ্জ এলাকায় ভুয়ো কলসেন্টার খুলে টেলি কলার ভাড়া করে প্রতারণার ব্যবসা চালাচ্ছিল। দমদম জেল ভেঙে মায়ানমারের মাদক পাচারকারী বইখা কিমাকে পালাতে সাহায্য করার মূল পান্ডা এই শেখ বিনোদ। এর আগে তাকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর টালিগঞ্জ এলাকায় অফিস খুলে নির্মাণের ব্যবসা শুরু করে বিনোদ। এর আগে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছিল, বিনোদের মদতে যাদবপুর এলাকায় মাসাজ পার্লারের আড়ালে মধুচক্র চলছে রমরমিয়ে। তবে কোনও ঘটনাতেই সরাসরি পুলিশ যোগ খুঁজে পায়নি বিনোদের। তবে সম্প্রতি বাঁশদ্রোণী এলাকার সোনালি পার্কের একটি নির্মাণ ঘিরে বিনোদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি হুমকির অভিযোগ ওঠে। পুলিশের কাছে অভিযোগও হয়। ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বিনোদ খুব ভাল সম্পর্ক রেখে চলে।
আরও পড়ুন: তিন দিনের মেয়েকে খুনের অভিযোগে ধৃত মা
বিনোদের শাগরেদদের একাংশের অভিযোগ, সম্প্রতি বিনোদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন শাসক দল ছেড়ে যাওয়া এক বিধায়ক। আর তার জেরেই শাসক দলের এক প্রভাবশালী নেতার রোষের মুখে পড়ে বিনোদ। তবে পুলিশ এ সব বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, বিনোদ জামতাড়া গ্যাংয়ের কায়দায় প্রতারণা চালাচ্ছিল। তাই গ্রেফতার করা হয়েছে।