ধর্মতলা, মঙ্গলবার দুপুর।
ক্যামেরার চোখ যা দেখেছে, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দৃষ্টি সে দিকে পড়েনি। তাই বুধবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তাঁর দাবি, সোমবার রাতের ভারী বৃষ্টির পরে জলবন্দি কলকাতার যে সব ছবি বুধবারের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলি ‘বানানো’। তথ্য এবং ছবিকে ‘বানানো’ বলার এমন নজির মেয়রের দল এবং সরকারের পক্ষে নতুন নয়। তবে, কলকাতায় বৃষ্টিতে জল জমছে না বোঝাতে গিয়ে শোভনবাবু যে ভাবে বাস্তবকে অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন, সেটা ভুক্তভোগীদের কাছে অশোভন বলে মনে হয়েছে।
সোমবার রাতের বৃষ্টিতে শহরের যে সব জায়গায় দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকে তার মধ্যে যোধপুর পার্ক, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, সুকান্ত সেতু, যাদবপুর থেকে শুরু করে উত্তরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং জল জমায় প্রসিদ্ধ ঠনঠনিয়া সবই ছিল। ধর্মতলায় রানি রাসমণি রোড লাগোয়া রাস্তায় জল জমেছিল মঙ্গলবার দুপুরেও। সেই সবেরই কিছু খণ্ডচিত্র বুধবার আনন্দবাজারে প্রকাশিত হয়। এ দিন পুরভবনে পুরসভার নিকাশি, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল, জঞ্জাল দফতরের পদস্থ অফিসারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন মেয়র। ভিডিও কনফারেন্স করে ১৬টি বরোর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের জল জমলেই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। সজাগ করতে বলেন জঞ্জাল অপসারণ কাণ্ডে কর্মরত ১০০ দিনের কর্মীদেরও। পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন রাস্তা ও অলি-গলির গালি পিট যথাযথ ভাবে পরিষ্কার না থাকায় জোরে বৃষ্টি হলেই জল জমার প্রবণতা বাড়ছে। বৈঠকে গালি পিট নিয়মিত পরিষ্কার রাখার ব্যাপারেও সতর্ক করা হয় জঞ্জাল অপসারণ দফতরকে।
ঠনঠনিয়া, সোমবার রাত।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ডেকে মেয়রের অভিযোগ, ‘‘একটি কাগজে ধর্মতলা ও ঠনঠনিয়ার যে জল ছবি দেখানো হয়েছে তা বানানো।’’ তাঁর দাবি, সে দিন ভারী বর্ষণে দক্ষিণের কিছু এলাকা জলমগ্ন হলেও উত্তরে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। এমনকী ধর্মতলা চত্বরে পর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে জল ছবির যে চিত্র প্রকাশ হয়েছে তাও ঠিক নয়।
মেয়রের এই বক্তব্য যে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মেলে না, তা দেখাতে আরও এক বার সোমবার বৃষ্টির পরে কলকাতার দুই এলাকা ঠনঠনিয়া এবং ধর্মতলার আরও ছবি দেওয়া হল। ধর্মতলার ছবি মঙ্গলবার দুপুরের।