ছ’মাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে প্রতীকী ছবি।
রেশন ডিলারদের সঙ্গে খাদ্য দফতরের সঙ্ঘাত পৌঁছল চরমে। লড়াই গড়াল আদালতে। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে খাদ্য দফতর। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোথাও রেশন ডিলারশিপ ফাঁকা হলে সেই জায়গায় খাদ্যশস্য বণ্টনের দায়িত্ব সাময়িক ভাবে কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠী, সমবায় সংস্থা বা সরকারি সংস্থাকে দেওয়া হবে। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই বেধেছে সঙ্ঘাত।
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে রেশন ডিলারদের লাইসেন্স কখনও সাময়িক বা পুরোপুরি বাতিল হয়। কিংবা অনেক ডিলার তাঁদের ডিলারশিপ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন। কোথাও ডিলারশিপ ফাঁকা হওয়ার পর যদি দেখা যায় কাছাকাছি কোনও রেশন ডিলার নেই, তা হলে সাময়িক লাইসেন্স ইস্যু করা যাবে। জেলাশাসকের সাহায্য নিয়ে কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘ বা মহাসঙ্ঘ, নথিভুক্ত সমবায় সংস্থাকে চিহ্নিত করে রেশনের লাইসেন্স দেওয়া যাবে। কোনও সরকারি সংস্থাকেও রেশনিং লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে। সাধারণ ভাবে ছ’মাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। খাদ্য দফতর চাইলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই সঙ্ঘাত শুরু হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। এই বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে রেশন ডিলারদের সংগঠন।
খাদ্য দফতরের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত ডিলারদের সংগঠনগুলি পছন্দ করছে না। রেশন ডিলারদের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছে অল বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের নেতা বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রেশন ডিলারদের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে খাদ্য দফতর। সত্যি সত্যি এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হলে রাজ্যের গোটা রেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। আমরা রেশন ডিলাররা এই সিদ্ধান্ত মানতে পারব না। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি, আশা করি সুবিচার পাব।’’ খাদ্য দফতরের সঙ্গে রেশন ডিলারদের সঙ্ঘাত কোনও নতুন ঘটনা নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু করেছে। সেই প্রকল্প নিয়েও খুশি নয় রেশন ডিলাররা। সেই বিষয়টিও পৌঁছে গিয়েছে আদালতে।
সম্প্রতি রেশন ডিলাররা খাদ্য দফতরের সামনে ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২৪ দফা দাবিতে এই ধর্নার কর্মসূচি হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু খাদ্য দফতরের অনুরোধে আপাতত এই আন্দোলন কর্মসূচি এক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছেন তাঁরা, এমনটাই দাবি রেশন ডিলারদের। তাঁদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ও মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষদের রমজান মাসের কথা মাথায় রেখে আমরা আমাদের কর্মসূচি স্থগিত রেখেছি। রমজান মাস শেষ হলে আগামী মে মাস থেকে আমরা এই আন্দোলন কর্মসূচি করব।