ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হল কলকাতায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের মতো তাপমাত্রার পারদ ৪২-৪৩ ডিগ্রি না ছুঁলেও, কাঠফাটা গরমে জর্জরিত কলকাতাবাসী এক পশলা বৃষ্টির জন্য চাতকের মতো চেয়েছিল হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসের দিকে। মার্চ মাসে কলকাতা ছিল বৃষ্টিহীন। এপ্রিলেও যে বৃষ্টি হবে তা হলফ করে বলা যাচ্ছিল না। আবহবিদরা মনে করছিলেন মার্চ-এপ্রিলে টানা দু’মাস কলকাতায় বৃষ্টি না হলে ১২২ বছরে নতুন রেকর্ড হবে। কারণ এর আগে কবে এমনটা হয়েছে তা পুরনো রেকর্ড খুঁজে হয়রান আলিপুরের আবহবিদরা। কিন্তু শুক্রবারের ০.২ মিলিমিটার বৃষ্টি অবশ্য ১২২ বছরের রেকর্ড ভাঙতে দিল না। কিন্তু এই ছিটেফোঁটা বৃষ্টির ফলে তাপমাত্রারও খুব একটা পরিবর্তন হল না।
চলতি বছরে ফেব্রুয়ারির শেষ দিন শেষ বার বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। ৬০ দিনের মাথায় আবার বৃষ্টি হল কলকাতায়। এই শতকের ২২ বছরে এই প্রথম একটানা ৫৯ দিন বৃষ্টিহীন ছিল কলকাতা। যদিও এর আগে ২০০৬ সালে এক টানা ৭২দিন বৃষ্টিহীন ছিল কলকাতা। সে বার গোটা ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ বৃষ্টি না হলেও ১৪ এপ্রিল বৃষ্টি হয়েছিল। এক আবহবিদের মতে ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টি না হওয়ার থেকে মার্চ, এপ্রিলে বৃষ্টি না হওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং চর্চার বিষয়। আবার ১৯৯৯ সালে গোটা এপ্রিল মাসে কলকাতায় এক বারও বৃষ্টি হয়নি। তবে মার্চ মাসে হয়েছিল ছিটেফোঁটা। একই রকম ভাবে ১৯০৯ বা ১৯৬০ সালে মার্চ এপ্রিলের মধ্যে একটি মাসেই বৃষ্টি পেয়েছিল কলকাতা।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, মূলত এই মরসুমে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয় বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত এবং সাগর থেকে আসা দক্ষিণ-পূর্ব বাতাসের জন্য বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। কিন্তু চলতি বছরে দক্ষিণ-পশ্চিম বায়ু থাকায় বৃষ্টি বা কালবৈশাখীর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি কলকাতায়। সে তুলনায় উত্তর-পশ্চিমের গরম বাতাসে দক্ষিণবঙ্গে গরম ছিল কাঠফাটা। তবে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। শুক্রবার অল্প হলেও বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। অন্তত ১২২ বছরের রেকর্ড অক্ষুন্ন রাখল শুক্রবার সন্ধ্যার .২ মিলিমিটার বৃষ্টি।