জনসমাগম: লোকাল ট্রেন চালু না হলেও ভিড় প্ল্যাটফর্মে। পটনা যাওয়ার ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। সোমবার, হাওড়া স্টেশনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
দিনে যত বার কোনও ট্রেন এসে থামছে, তত বার জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে প্ল্যাটফর্ম। কামরাগুলিতেও ছড়ানো হচ্ছে সেই জীবাণুনাশক। কিন্তু ট্রেন থেকে নামার বা ট্রেনে ওঠার সময়ে যে ভিড় হচ্ছে, তা কোনও ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না হাওড়া স্টেশনে।
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ একটি বিশেষ ট্রেন বর্ধমান থেকে প্রায় এক হাজার যাত্রী নিয়ে হাওড়ায় ঢোকার পরে ভিড়ের যে চিত্র দেখা গিয়েছে, তাতেই আতঙ্কিত টিকিট পরীক্ষক থেকে স্টেশনের পদস্থ অফিসারেরা। তাঁদের বক্তব্য, এ দিনের ওই দৃশ্যই বলে দিচ্ছে, লোকাল ট্রেন চালু হলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করাটা কত বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
কাল, বুধবার, চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন। দিনে ২০২টি ট্রেন চলবে হাওড়া শাখায়। হাওড়া স্টেশনে তাই ব্যস্ততা তুঙ্গে। ট্রেনের কামরা থেকে প্ল্যাটফর্ম— সর্বত্রই চলছে ঝাড়ামোছা ও জীবাণুমুক্ত করার কাজ। সকাল থেকেই টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড়। যাত্রীদের ট্রেনের সময়সূচি সম্পর্কে অবহিত করতে চালু হয়েছে ডিসপ্লে বোর্ড। কিন্তু এত রকম প্রস্তুতির মধ্যেও যে প্রশ্নটি ঘুরে-ফিরে এসেছে, তা হল, লোকাল চালু হলে স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি? যাত্রীরা কি আদৌ দূরত্ব-বিধি মেনে চলবেন? না কি কোভিড-পূর্ববর্তী আগের ছবিটাই ফিরে আসবে?
আরও পডুন: হকারদের বাদ রেখেই ঘুরবে লোকালের চাকা, বিক্ষোভের ডাক
এখন অবশ্য কোভিড-বিধি মেনে যাত্রী ছাড়া কাউকেই প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ দিন এক টিকিট পরীক্ষক বললেন, ‘‘বর্ধমান থেকে আসা স্পেশ্যাল ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার পরেই যে ভাবে হাজার হাজার মানুষ ঠেলাঠেলি করে নামছিলেন, তা দেখে আমরা আতঙ্কিত।’’ লোকাল ট্রেন ঢুকলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ যে কার্যত অসম্ভব, তা মানছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকও। বললেন, ‘‘ট্রেনে ওঠা আর নামার সময়ে যাত্রীদের যে হুড়োহুড়ি চলে, তা সারা দিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’’
যদিও হাওড়া স্টেশনের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষক অজয় কুমার বললেন, ‘‘কামরা ও প্ল্যাটফর্ম দু’বেলা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। স্টেশনে কোভিড সচেতনতা নিয়ে প্রচার চলছে। এর পরেও যদি যাত্রীরা নিয়ম না মানেন, তা হলে বিপদ তাঁদেরই বাড়বে।’’