বঙ্কিম সেতুর এই ডিভাইডারে বসানো হবে রেলিং। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
দুর্ঘটনা ঠেকাতে এ বার হাওড়ার বঙ্কিম সেতুর ডিভাইডারের উপরে বসানো হবে রেলিং। হাওড়া সিটি পুলিশের অনুরোধে প্রাথমিক ভাবে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, বঙ্কিম সেতুর ডিভাইডারের উচ্চতা কম হওয়ার জন্য অনেকে তাঁদের গাড়ি ডিভাইডারের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে নেন। ফলে মাঝেমধ্যেই লেগে থাকে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি, পথচারীরা অনেক সময়ে ডিভাইডার টপকে অন্য লেনে যেতে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হন। এই সব ঘটনা বন্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে সেতুর ডিভাইডারের উপরে রেলিং দেওয়ার জন্য কেএমডিএ-কে অনুরোধ করা হয়েছিল।
হাওড়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর ক্ষেত্রে মূলত যে দু’টি ত্রুটি বিশেষজ্ঞেরা চিহ্নিত করেছিলেন, সেগুলি হল: প্রথমত, সেতুর ফুটপাতের উচ্চতা অনেক কম এবং দ্বিতীয়ত, সেতুর ডিভাইডারের উচ্চতাও কম হওয়ার জন্য সহজে গাড়ি ঘুরিয়ে নেওয়া যায়। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) ওয়াই রঘুবংশী জানান, ডিভাইডার উঁচু না হলে বড় গাড়ি সহজে সেটির উপরে উঠে যায়। ফলে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির সঙ্গে অনেক সময়ে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, ‘‘যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমরা ডিভাইডারের উপরে রেলিং দেওয়ার জন্য কেএমডিএ-কে বলেছিলাম। ওঁরা তা বসাবেন বলে জানিয়েছেন।’’ এ ব্যাপারে কেএমডিএ-র এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে দেওয়া এই প্রস্তাব মেনে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।’’
সম্প্রতি বঙ্কিম সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে সেই পরীক্ষার ফল এখনও বেরোয়নি। তবে কেএমডিএ সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, সেতুটির অবস্থা কলকাতার বেশ কিছু সেতুর তুলনায় ভাল। ভার বহন ক্ষমতাও অনেক বেশি। তাই লোহার রেলিং বসালে সমস্যা হবে না। সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির সংখ্যাও কমাতে হবে না।
পুলিশ জানিয়েছে, বঙ্কিম সেতু দিয়ে গড়ে দৈনিক ১৫-২০ হাজার গাড়ি চলে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য দীর্ঘ ১১ বছর অবরুদ্ধ ছিল গোটা হাওড়া ময়দান। সে কারণে এত দিন হাওড়া ময়দানমুখী সমস্ত গাড়িকে বঙ্কিম সেতুর বঙ্গবাসী প্রান্তে এসে ঘুরে যেতে হত। সম্প্রতি মেট্রো কর্তৃপক্ষ হাওড়া ময়দানের রাস্তা আংশিক চালু করে দেওয়ায় সেই সমস্যা মিটেছে। পুলিশ মনে করছে, সেতুর ডিভাইডারের উপরে রেলিং বসানো হলে মাঝপথ থেকে আর গাড়ি ঘোরানো যাবে না। ফলে সেতুর উপরে বাস, ট্যাক্সি দাঁড় করানোর প্রবণতাও বন্ধ হবে।