নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ছবি পিটিআই
মাঝেরহাটে ভাঙা সেতু ভেঙে ফেলে তৈরি হবে নতুন সেতু। কাজ শেষ হবে এক বছরের মধ্যে। শুক্রবার নবান্নে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেতুভঙ্গ নিয়ে মুখ্যসচিব মলয় দে যে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতেই নতুন করে সেতুটি বানানোর কথা বলা হয়েছে। সেই কাজ ‘টার্ন কি’ পদ্ধতিতে কোনও সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশও করেছেন তিনি। এই পদ্ধতিতে সরকার সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র চেয়ে কোনও একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেবে। তারাই সেতুর নকশা থেকে শুরু করে নির্মাণ, সবই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করবে।
মমতা বলেন, ‘‘বেলি ব্রিজ করাটা সমাধান নয়। তাতে সাময়িক ভাবে ছোট গাড়ি হয়তো যাবে, কিন্তু স্থায়ী সমাধান হবে না। তাই নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেহালার মানুষের অসুবিধা হবে। কিছু রাস্তা চওড়া করা যায় কি না, তা পুলিশকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছি।’’
সেতু যত দিন না তৈরি হচ্ছে, তত দিন মাঝেরহাট সেতুর সমান্তরাল দু’টি রাস্তা নির্মাণে হাত দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ জন্য বজবজ লাইনে রেল লাইনের উপর দু’টি লেভেল ক্রসিং প্রয়োজন। রেল এ নিয়ে গড়িমসি করছে বলে নবান্নের অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘লেভেল ক্রসিং তৈরি ও তার পাহারাদারের বেতনের খরচ রাজ্য বহন করবে। কোথাও লেভেল ক্রসিং এক বার উঠে গেলে নতুন করে তা করা হয় না। কিন্তু এটা তো আপৎকালীন অবস্থা। তাই আশা করব, রেল সদর্থক পদক্ষেপ করবে।’’
দেখুন ভিডিয়ো
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সামনে পুজো, গঙ্গাসাগর মেলা। তাই আপাতত অস্থায়ী রাস্তা হলেও নতুন সেতু তৈরির কাজ খুব দ্রুত সারতে হবে। কী ভাবে তা হবে, তা মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কমিটি ঠিক করবে। এই কমিটি নতুন সেতু তৈরির কথা সুপারিশ করায় সিদ্ধান্ত নিতে যে সুবিধা হয়েছে, তা-ও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘পোস্তায় উড়ালপুল ভাঙার পরে রাজ্যের কী করণীয় তা বিশেষজ্ঞ সংস্থা নির্দিষ্ট করে দেয়নি। ফলে ওই সেতুটি রাখা হবে, না কি ভাঙা হবে, তা ঠিক করা যাচ্ছে না। মাঝেরহাটের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই।’’
কিন্তু এক বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণ কি সম্ভব? টাকাই বা কী ভাবে আসবে? এ নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের মতে, সেতুর নকশা না-হলে খরচ বলা সম্ভব নয়। তবে বাইরে থেকে ইস্পাতের কাঠামো এনে সেতু তৈরি হলে এক-দেড় বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব। কিন্তু মাঝেরহাটে রেললাইন যেমন রয়েছে, তেমনই রাস্তাটি ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যে পড়ে। তাই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও রেলের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পূর্ত দফতর।