Kolkata Traffic Police

সিসি ক্যামেরা বসানোর আবেদনের দীর্ঘ তালিকা, প্রশ্নে পুলিশের ভূমিকা

শুক্রবার বেহালার দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার মানুষের দাবি, অঘটনের পরেও অবশ্য প্রশাসনের টনক নড়ত না, যদি না পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতেন মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৩৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

একাধিক বার আবেদন করেও যাতে সাড়া মেলেনি, সেই সাড়া মিলল একটি প্রাণের বিনিময়ে। শুক্রবার বেহালার দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার মানুষের দাবি, অঘটনের পরেও অবশ্য প্রশাসনের টনক নড়ত না, যদি না পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতেন মানুষ।

Advertisement

ওই পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে প্রাথমিকের এক পড়ুয়ার। বাবার সঙ্গে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে ঢোকার সময়ে বালি ভর্তি লরি পিষে দেয় আট বছরের সৌরনীল সরকারকে। দুর্ঘটনার পরপরই সৌরনীলের স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, ডায়মন্ড হারবার রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তার ধারে তাঁদের স্কুল। তাই পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্কুলের সামনে ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েনের জন্য বার বার আবেদন করা হলেও শোনা হয়নি।

এ বার শোনা হল। তাই দুর্ঘটনার পরে ওই সন্ধ্যায় রাতারাতি রাস্তার দু’ধারে বসানো হল বুম ব্যারিয়ার। শনিবার সকাল ৬টা থেকে শহরে ঢুকবে না কোনও লরি— কলকাতার নগরপালের এমনই নির্দেশিকা রাতেই পৌঁছে গেল থানায় থানায়। পাশাপাশি, শনিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু, এ সব কেন স্বাভাবিক সময়ে হয় না? মৃত্যু বা বড় অপরাধের পরেই কেন নিরাপত্তা কঠোর করার কথা মনে হয়? প্রশ্ন ছোট্ট সৌরনীলের শিক্ষক এবং এলাকাবাসীর।

Advertisement

একই ভাবে পুলিশি নিস্পৃহতার অভিযোগ আনছেন নিজের এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর আবেদন করেও সাড়া না মেলা শহরবাসীর অনেকেই। তাঁদের দাবি, আবেদনের পরে কোথাও পেরিয়েছে তিন বছর, কোথাও দেড় বছর। আবেদনের ভিত্তিতে ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত হলেও খরচ নিয়ে মতানৈক্যে কাজ হয়নি! ফলে বসতি বাড়লেও শহরের বহু এলাকা কার্যত ক্যামেরার নজরের বাইরে। আবেদনকারীদের একাংশের জিজ্ঞাস্য, ‘‘তবে কি বড় অপরাধের পরে পুলিশের হুঁশ ফিরবে?’’

অভিযোগ, গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্ণশ্রী থানার ব্যানার্জিপাড়া, পাঠকপাড়া, অভয় বিদ্যালঙ্কার রোডের বাসিন্দারা এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসাতে বার বার অনুরোধ করেছেন। পুলিশকর্তারা এলাকায় গিয়ে কতগুলি ক্যামেরা লাগানোর প্রয়োজন, তা ঠিকও করেছেন। কিন্তু কাজ এগোয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য আমরা ২০২০ সাল থেকে লড়ছি। থানা, ডিভিশন এবং লালবাজারে জানিয়েছি। কয়েক হাজার বাসিন্দার নিরাপত্তার কথা ভেবে ইমেল করেছি।’’

ক্যামেরা নিয়ে একই অভিযোগ বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুর, সর্দারপাড়ার একাংশ-সহ হরিদেবপুরের পূর্বপাড়া, নোনাডাঙার একাংশ এবং চৌবাগার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। ছোট-বড় অপরাধে লাগাম টানতে সিসি ক্যামেরা বসানোর অনুরোধ জানালেও কাজ হয়নি বলেই তাঁদের অভিযোগ। বছর দেড়েক আগে বাঁশদ্রোণীর ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের কথা এগোলেও খরচ নিয়ে মতানৈক্যে কাজ হয়নি।

সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে লালবাজারের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘শহরের অধিকাংশ এলাকা ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। বহু এলাকায় ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়াও চলছে। অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement