— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভগ্নদশায় রয়েছে রাজ্যের অসংখ্য প্রাথমিক স্কুল। এ বার তাই প্রতিটি ব্লক এবং মিউনিসিপ্যালিটি থেকে ১০টি করে প্রাথমিক স্কুল নির্বাচন করে মেরামতির কাজ শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে শিক্ষা দফতর। সেই সঙ্গে, ওই প্রাথমিক স্কুলগুলিতে নতুন ক্লাসঘর তৈরি করে চতুর্থ শ্রেণির সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণিও চালু করা যায় কিনা, তা নিয়েও সমীক্ষা করার কথা বলেছে তারা।
উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণিকে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের কিছু প্রাথমিক স্কুলে ২০১৮ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণিকে যুক্ত করা শুরু হলেও অধিকাংশ প্রাথমিক স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণি নেই। এ হেন পরিস্থিতিতে পঞ্চম শ্রেণির সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে শিক্ষা দফতরের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ। তবে তাঁদের একটি অংশের এ-ও অভিযোগ, প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি যোগ করতে হলে শুধু স্কুল ভবন মেরামত করলেই চলবে না। তার চেয়েও জরুরি শিক্ষক নিয়োগ।
শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বহু প্রাথমিক স্কুল আছে, যেখানে স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন মাত্র এক জন। এমনও দেখা যাচ্ছে, কোনও স্কুলে হয়তো পড়ুয়া আছে ৫০ জন। শিক্ষক আছেন দু’জন। সেই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হওয়ার পরে পড়ুয়ার সংখ্যা হয়তো বেড়ে দাঁড়াল ৭০। সে ক্ষেত্রে ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা না হলে পড়াশোনার মানের অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষকদের।
পাশাপাশি, তাঁদের একাংশের আরও প্রশ্ন, প্রতিটি ব্লক বা মিউনিসিপ্যালিটি থেকে শিক্ষা দফতর যে ১০টি করে প্রাথমিক স্কুল চিহ্নিত করতে বলেছে, সেই বাছাই হবে কিসের ভিত্তিতে? প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সংগঠনের কয়েক জন সদস্যের মতে, কোন স্কুল ভবনের অবস্থা কেমন, সেই সমীক্ষা করা উচিত সরকারি ইঞ্জিনিয়ারদের। ‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডার অভিযোগ, ‘‘এর আগেও কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হয়েছে। কিন্তু কোন কোন স্কুলে তা যোগ করা হবে, তা নিয়ে সমীক্ষা ঠিক মতো হয়নি। ফলে এমনও হয়েছে, যে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি যোগ করার পরিকাঠামোই নেই, সেখানে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হওয়ায় সেই পরিকাঠামো আরও খারাপ হয়েছে।’’
শহরে এমন বহু স্কুল আছে, যেখানে মাধ্যমিক স্তরের পাশাপাশি প্রাথমিকের পঠনপাঠন চলে। ওই স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যাও বেশি। অথচ, প্রাথমিকে পর্যাপ্ত ক্লাসঘর নেই। শিক্ষকেরা মনে করছেন, এমন স্কুলগুলিতেও নতুন ক্লাসঘর তৈরি করা প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।