—প্রতীকী চিত্র।
শুধু গলায় নয়, শরীরের একাধিক জায়গায় সদ্য কেনা ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল দমদমের গৃহবধূ দেবকী বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং তাঁর মেয়ে দিশা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, ওই দু’জনের গলার নলি কেটে ফেলার পাশাপাশি পেটে এবং হাতেও আঘাত করা হয়েছিল। শুক্রবার দমদমের জীবনরতন ধর রোডের একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে ওই মা ও মেয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। ওই দিনই বাড়ির গৃহকর্তা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেহ প্রথমে মধ্যমগ্রামের রেললাইন থেকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোট। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, ওই সুইসাইড নোটে লেখা ছিল ‘আমাদের দেহ যেন কলকাতায় শেষকৃত্য করা হয়।’ অর্থাৎ, ওই দু’জনের মৃত্যু সম্পর্কে গৌতম জানতেন। তা ছাড়া, গৌতমের স্ত্রী ও মেয়ের আঘাতের প্রকৃতি এবং পারিপার্শ্বিক তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কার্যত নিশ্চিত যে, গৃহকর্তা তথা প্রাক্তন সেনাকর্মী গৌতমই স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা করে আত্মঘাতী হয়েছেন। দমদম থানার পুলিশ খুনের মামলা রুজু করেছে।
ময়না তদন্তের প্রক্রিয়া শেষ করে গৌতমের ইচ্ছানুসারে (সুইসাইড নোটে লেখা) শনিবার তিন জনেরই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় কলকাতার নিমতলা ঘাটে।
এই হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে পুলিশ সুনির্দিষ্ট ভাবে কিছু না বললেও গৌতমের মানসিক সমস্যাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি ধারালো ছুরিও কেনা হয়েছিল। সেই ছুরি দিয়েই স্ত্রী ও মেয়ের শরীরের একাধিক জায়গায় গৌতম আঘাত করেন বলে অনুমান। তার পরে ঘরেই আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। সিলিং থেকে নাইলনের দড়ি ঝুলিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ভাবে সেই কাজ করে উঠতে না পারায় তিনি মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরে মধ্যমগ্রামে চলন্ত ট্রেনের সামনে গিয়ে পড়েন বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তবে স্রেফ মানসিক অবসাদ, না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, সে দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন এক পুলিশ আধিকারিক।